ষষ্ঠীর ঘট বসেছে, দুর্গা পূজা শুরু
৪ অক্টোবর ২০১৯ ১১:০০
ঢাকা: ষষ্ঠী পূজার ঘট বসেছে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা ঘোড়ায় চড়ে কৈলাশ থেকে নেমে এসেছেন মর্ত্যলোকে। এরই সঙ্গে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে অল্পারম্ভ, বিহিত পূজা ও বোধনের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠীর দিনের দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রনজিত চক্রবর্তী বলেন, মা দুর্গা কৈলাশ থেকে পৃথিবীতে এসেছেন। আমরা তাকে বরণ করে নিয়েছি, শুরু হয়েছে দুর্গা উৎসব। দুর্গা পূজার মাধ্যমে দেশের সকল মানুষের মঙ্গল কামনা করছি।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুক্রবার ভোরে শুরু হয় ষষ্ঠীপূজার আয়োজন। ঢাক-ঢোলের বাজনা, কাঁসা, শঙ্খের আওয়াজ এবং ভক্তদের উলুধ্বনিতে দুর্গাকে পৃথিবীতে স্বাগত জানান ভক্তরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দুর্গার বোধনের মধ্য দিয়ে উৎসবের প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। শুক্রবার ষষ্ঠী, শনিবার হবে মহাসপ্তমী পূজা। এরপর রোববার মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা। সোমবার মহানবমী আর মঙ্গলবার বিজয়া দশমী। দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে ঘোড়ায় চড়ে বিদায় নেবেন দেবী দুর্গা।
ষষ্ঠীর সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দেখতে আসেন পদ্মজা সরকার। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পূজা। ষষ্ঠী পূজার সকালে ঢাকেশ্বরী না এলে পূজার আনন্দ অনুভব করা যায় না। এজন্য প্রতিবছর এখানে আসি।
এদিকে, দুর্গা পূজা সামনে রেখে জাতীয় মন্দিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চক বাজার থানার উপ পরিদর্শক কবির উদ্দিন মন্ডল বলেন, পূজা উৎসবে নিরাপত্তা দিতে সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো নির্দেশনা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষেরা যেন সুন্দরভাবে তাদের ধর্মীয় উৎসবে অংশ নিতে পারে।
তিনি জানান, সারা দেশে মণ্ডপগুলোতে ৫ অক্টোবর থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে তিন লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। নারী স্বেচ্ছাসেবক দল, ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশও উপস্থিত থাকবে। এ ছাড়া মণ্ডপে সিসিটিভি, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। পূজামণ্ডপে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকবেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
পূজার দিনগুলোতে জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে সব প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পূজার সময় রাজধানীর কোথাও জলাবদ্ধতা হলেই ঢাকা দক্ষিণ সিটির ইমার্জেন্সি রেসপনস টিম দ্রুত মাঠে নামবে।
প্রসঙ্গত, দুর্গা শব্দের অর্থ হলো আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয় দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন।
দুর্গা পূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরতকালে দুর্গা পূজা প্রচলিত হয়ে যায়।