Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘‍শিল্পস্থাপনে দূষণ-ধ্বংস বাংলাদেশের, সুবিধা নেবে ভারত’


৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:৪২

ঢাকা: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক সুলতানা কামাল বলেছেন, দূষণ, প্রকৃতি ধ্বংস আর মানুষের জীবনের জন্য কঠিন অবস্থা তৈরি করে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ পরিকল্পনায় শিল্পস্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। তবে বাংলাদেশকে একটা বাজারের জায়গা বানিয়ে সুবিধা নেবে ভারত। এটা নিয়ে চিন্তা করা দরকার।

শনিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ‘ইউনেস্কোর ৪৩তম সভার সব সুপারিশ বাস্তবায়ন, সুন্দরবানের পাশে রামপালসহ শিল্প নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ ও সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা সম্পন্ন’ করার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সুলতানা কামাল বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে সকল সুযোগ-সুবিধা পশ্চিম পাকিস্তান নিচ্ছিল। এখন এমন হয়েছে- সমস্ত দূষণ, প্রকৃতিকে ধ্বংস, মানুষের জীবনের জন্য কঠিন অবস্থা তৈরি করে সমস্ত শিল্প হবে বাংলাদেশে। সেগুলো যৌথ পরিকল্পনায় হবে। তবে প্রোডাক্টটি হবে ভারতীয়। সমস্ত সুবিধাগুলো তারা নিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে ভারতবিরোধী কোন কথা বলতে চাই না। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদের পাশে না দাঁড়ালে মুক্তিযুদ্ধ যেভাবে শেষ করতে পেরেছি হয়তো সেভাবে শেষ করতে পারতাম না। তাদের প্রতি অবশ্যই কৃতজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু তার পরিবর্তে বাংলাদেশকে একটা বাজার বানিয়ে কিংবা শিল্প কারখানার জায়গা বানিয়ে নিজেরা সব সুবিধা নিয়ে যাবে- এটা নিয়ে কিন্তু আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।’

সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক বলেন, ‘আমি একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বলি, বাংলাদেশ সব থেকে সস্তা শ্রমের দেশ। এখানে বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ রয়েছে। অর্থাৎ আমরা সব দিয়ে দিতে পারি। শিল্পের জন্য যেনতেনভাবে মানুষকে তাদের জায়গা থেকে উৎখাত করে দিতে পারি।’

বিজ্ঞাপন

লিখিত বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘রামপালের প্রকল্প নির্মাতা ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি তাদের নিজ দেশে সব কয়লা বিদ্যুৎপ্রকল্প স্থগিত করেছে। অথচ বাংলাদেশে সেই ক্ষতিকর প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা করছে। অথচ তারা তাদের কার্বন তৈরির দায় কমানোর জন্য গুজরাটে বিশ্বের বৃহত্তম সৌরশক্তি পার্ক স্থাপনে ২৫ হাজার কোপি রুপি বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা কয়েকটি রাজ্যের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র অর্ধদিবস বন্ধ রাখার কথাও জানিয়েছে। অথচ ওই একই প্রতিষ্ঠান প্রবল গণআপত্তির মুখেও বাংলাদেশে কয়লাবিদ্যুৎ তৈরিতে পিছপা হচ্ছে না। এটি নিঃসন্দেহে একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আচরণ।’

‘রামপাল ও বন বিধ্বংসী সব বিষয়ে সরকারের সব সিদ্ধান্তই বিজ্ঞান বিরোধী ও অযৌক্তিক। সম্ভবত রাজনৈতিক বিবেচনা থেকেই এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হচ্ছে। আমরা চাই সরকার তার ভুল অবস্থান থেকে সরে এসে রামপাল প্রকল্প বাতিল করুক এবং বনবিরোধী সব স্থাপনা উৎখাত করুক।’ – বলেন সুলতানা কামাল।

সুন্দরবন রক্ষায় ইউনেস্কোর দেওয়া নির্দেশনাবলী মানা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আব্দুল মতিন এবং বাপার যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সুন্দরবন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সুলতানা কামাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর