কাউন্সিলর মিজানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও অস্ত্র আইনে মামলা
১২ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:১২
ঢাকা: অবৈধ অস্ত্র জব্দ ও বিভিন্ন দেশে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
র্যাব-২ এর সিও লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সারাবাংলাকে জানান, মানি লন্ডারিং আইনে মোহাম্মদপুর থানায় ও অস্ত্র আইনে শ্রীমঙ্গল থানায় আরেকটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কাউন্সিলর মিজানকে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে এক বাসা থেকে আটক করা হয়। গোয়েন্দা সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে, কাউন্সিলর মিজান শ্রীমঙ্গলে তার এক বান্ধবীর বাসায় চারদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। এ সময় তার কাছ থেকে একটি অস্ত্র ও চার রাউন্ড গুলি জব্দ করে র্যাব।
সূত্র জানিয়েছে, শ্রীমঙ্গল সীমান্ত দিয়ে একাধিকবার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কাউন্সিলর মিজান। পালানোর সময় ব্যক্তিগত খরচের জন্য প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ টাকা তুলেছিলেন তিনি। শ্রীমঙ্গল থেকে আটকের পর মিজানকে নিয়ে মোহাম্মদপুরে তার কার্যালয় ও বাসায় র্যাব অভিযান চালায়।
অভিযানে কাউন্সিলর কার্যালয়ে তেমন কিছু পাওয়া না গেলেও তার বাসায় ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকার চেক এবং এক কোটি টাকার স্থায়ী আমানত (এফডিআর) এর কাগজপত্র পায় র্যাব। সেই সঙ্গে আমেরিকার টেক্সাস ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে দুটি বাড়ি এবং আমেরিকার একটি বিলাসবহুল গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করে র্যাব।
সূত্র বলছে, সম্প্রতি রাজধানীতে চলমান শুদ্ধি অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকায় কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজানের নামও ছিল। ওই তালিকার সূত্র ধরে তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে র্যাব। তদন্তে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট একাধিক অভিযোগের সত্যতা মেলে। এরপর তাকে ধরতে অভিযান শুরু করে র্যাব। তবে র্যাবের বিষয়টি টের পেয়ে যান তিনি। তাই গত মঙ্গলবার আত্মগোপনে চলে যান মিজান। তবে তাকে আটক করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সব বিভাগ নজরদারি করতে থাকে।
র্যাবের একজন সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ টাকা তুলেছিলেন কাউন্সিলর মিজান। তবে তাকে আটকের সময় দুই লাখ টাকা পাওয়া যায়। বাকি টাকা কোথায় রেখেছে সে বিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি।’
র্যাবের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের হাজারের অধিক দোকান থেকে তার নামে মাসিক চাঁদা তোলা হতো। যে টাকার পরিমাণ মাসে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার মতো। এ সব টাকা ছিল তার অন্যতম আয়ের উৎস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেশকিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে। কাউন্সিলর মিজান মানি লন্ডারিং করেছেন এর প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া তাকে আটকের সময় অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ পাওয়া গেছে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর আরও নিশ্চিত হয়ে পরবর্তীতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’