সামর্থ্য থাকার পরও ট্যাক্স না দিলে ছাড় নয়: অর্থমন্ত্রী
১৩ অক্টোবর ২০১৯ ২১:০৮
ঢাকা: সামর্থ্য থাকার সত্ত্বেও যারা ট্যাক্স দেবে না তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে এনবিআর কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে রাজস্ব আহরণ বিষয়ত এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ‘যাদের ট্যাক্স দেওয়ার সামর্থ্য আছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। কারণ তারা বিদেশে গিয়ে যে পরিমাণ একদিনে শপিং করে তার একভাগ বছরে ট্যাক্স দিলে আমার দেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যেত। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আইন করেছি আইনের বাস্তবায়ন করতে হবে। আইনের অবমাননা যারা করবে আইন বাস্তবায়নে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসি তখন রাজস্ব আহরণ ছিল ৫৮ হাজার কোটি টাকা। তা গত বছর ২ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা আর এই অর্থবছরে ৩ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এই রাজস্ব আমরা আহরণ করবই। সেই বিশ্বাস আমাদের আছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ের জন্য একমাত্র প্ল্যাটফরম এনবিআর। জাতীয় বাজেটে যা ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। কোনো সংযোজন-বিয়োজন হবে না। নতুন করে কোনো এসআরও জারি করা যাবে না। যদি করতে হয় আলাদা ফাইল খুলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে। বাজেটে যা আছে আমাদের অবশ্যই অর্জন করতে হবে। আজ রাজস্ব আদায় কম হওয়ার অনেক কারণ শুনতে হয়েছে। পরবর্তী মিটিংয়ে রাজস্ব কম হওয়ার কারণ বলতে পারবেন না। সামনে লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে সেটা বাস্তবায়নযোগ্য। বাস্তবায়ন করার জন্য জনবল বাড়ানে হবে। প্রয়োজনে এক লাখ জনবল দেব।’
সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা ১২ লাখের মতো টিআইএনধারী পেয়েছি তাদের বলা হয়েছে এ বছর রিটার্ন দাখিল করতে। যদি তারা রিটার্ন দাখিল না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এবার আমরা রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা বাড়াতে পারব, সে লক্ষ্যে কমিশনাররা কাজ করছে। ২২ লাখ রির্টানের জায়গায় এবার আমরা ৩০ লাখ রিটার্ন দাখিল হবে বলে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ফলে কিছু ব্যবসায়ীর মধ্যে টার্নওভার কম বলে ভ্যাট দিতে হবে না। এমনকি অনেকে ৩ কোটি টাকার মধ্যে থাকতে চেয়েছিল। এ বিষয়গুলো নিয়ে ভ্যাটের কর্মকর্তারা কাজ করছে।’
এছাড়া কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘আমি পদোন্নতি এবং প্রাপ্যতা যা সেটা দিয়ে দিচ্ছি। তবে শক্ত হচ্ছে আমি কারও বিরুদ্ধে অবমাননা পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি চাই আপনারা (এনবিআর কমিশনার) সৎভাবে দেশের জন্য কাজ করেন। আমরা খুব দ্রুততার সঙ্গে ইএফডি নিয়ে কাজ করছি। আমরা দুইটি টেন্ডারের আদেশ দিয়েছি। অর্থাৎ ২০ হাজার ইএফডির অর্ডার দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে আমরা দুই লাখ মেশিন নেব। তবে এরইমধ্যে আরও পাঁচ লাখ ইএফডি মেশিন কেনার স্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ পথে। সব কাগজপত্র প্রস্তুত হয়ে গেছে। এগুলো হলে ভ্যাটে প্রভাব পড়বে না। অপরদিকে অস্থায়ীভাবে কিছু লোক নেওয়া হবে।’
আলোচনা সভায় এনবিআরের সব সদস্য ও কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।