অনলাইনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ায় তামিম-আজমির
১৪ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:১২
ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। এরা হলেন মেহেদী হাসান তামিম ও আব্দুল্রাহ আজমির। এর মধ্যে তামিম গুলিস্তান ও সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড়ে পুলিশের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল। তিনি নিজে বোমা বহন করে ছুড়েছিলেন। আর আজমির বোমাটি তৈরি করেন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ সব তথ্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: পুলিশের ওপর বোমা হামলা: নব্য জেএমবির দুই সদস্য গ্রেফতার
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের তক্কার মোড় এলাকার জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেফতার করা হয় ফরিদ উদ্দিন রুমি ও মিশুক খান। এদের মধ্যে রুমি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি ছাড়াও আরও চারজনের জড়িত থাকার কথা বলেন। সেই চারজনের মধ্যে দুইজন হলেন তামিম ও আজমির। এরা দুজনই খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে পাস করে বের হন। এছাড়া জালাল উদ্দিন রফিকসহ আরেক জঙ্গি পলাতক রয়েছেন।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আইএসের নামে যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সেটিও চারজন মিলে তৈরি করে। এর মধ্যে একজন হলেন আজমির। আজমির একটি করপোরেট কোম্পানিতে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। সেখানে তিনি একটি ওয়াকিটকি ব্যবহার করেন। সেই ওয়াকিটকি নিয়েই ভিডিওতে ছিলেন আজমির। এ গ্রুপের মোট ছয়জন অনলাইনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ায়। তারা আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণ করা ছিল পুলিশের ওপর হামলার উদ্দেশ্য।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জেএমবিতে যোগ দেওয়ার আগে তারা বিভিন্ন মতাদর্শ সম্পর্কে ধারণা নেয়। এর মধ্যে জেএমবি বেস্ট জেনে তারা একটি গ্রুপ তৈরি করে। এক সময় তারা পাঁচ সদস্যের একটি সামরিক শাখা গঠন করেন। সামরিক শাখার সদস্যদের মধ্যে তিনজন রুমি, তামিম, আজমির গ্রেফতার হয়েছেন। বাকি দুইজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে আরও একটি হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এ জন্য তারা নারায়ণগঞ্জে তারা দুটি আইইডি বোমা প্রস্তুত করছিল। একটি পুরোপুরি প্রস্তুত হয়েছিল আরেকটি আংশিক প্রস্তুত ছিল। এরইমধ্যে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) তক্কার মোড়ে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া বোমা দুটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। ফলে তাদের হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।’
সিটিটিসি সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে কুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে বের হওয়ার পর অনলাইনে বিভিন্ন জঙ্গিবাদের বই পড়া শুরু করেন। ছাত্র থাকা অবস্থায় তারা বিভিন্ন মতাদর্শের বই পড়েন। আজমিরের গ্রামের বাড়ি ভোলাতে। আজমিরের নেতৃত্বে ২০১৮ সালে ভোলার একটি দুর্গম চরে বাড়ি ভাড়া করে প্রশিক্ষণ শুরু করেন চারজন। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, নব্য জেএমবির আইডিওলোজি বেস্ট। এরপর ২০১৯ এর শুরুতে এসে সিদ্ধান্ত নেন, তাদের একটি সামরিক শাখা দরকার।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জে একটি বাসা ভাড়া করা হয়। সেখানে অনলাইনের মাধ্যমে বোমা তৈরির বিভিন্ন উপায় বের করা হয়। তারা নিজেরাও একটি বোমা তৈরির ম্যানুয়াল তৈরি করেন এবং সেটা ভিডিও করে রাখেন। সেখানকার তৈরি বোমা দিয়েই রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা চালান।