Thursday 10 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিচারপতি নিয়োগ বার সভাপতি-সম্পাদকের দুই মত


১৭ অক্টোবর ২০১৯ ২১:৫২ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ২২:১০
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: সংবিধানের আলোকে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ চান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন। অন্যদিকে বিচারপতি নিয়োগে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবি করেছেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব ‍উদ্দিন খোকন।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী মিলনায়তনে একই সংবাদ সম্মেলনে ‍পৃথক পৃথক এ দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সংবিধানের ৯৫(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিলের রায়ের আলোকে বিচারক নিয়োগের নীতিমালা প্রণয়ন করে বিচারপতি নিয়োগে আইনজীবী সমাজের দাবি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই কার্যকরী কমিটির ও একই সালের ২১ আগস্ট তারিখে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওইসব সভায় হাইকোর্ট বিভাগের রায় অনুযায়ী নীতিমালা প্রণয়ন করে বিচারপতি নিয়োগ করা দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

ওই রায়ে বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, কার্যকর ও বস্তুনিষ্ঠ করার প্রয়োজনের সাতটি যোগ্যতা নির্ণায়ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে অবশ্যই সংবিধানের অষ্টম অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির প্রতি অকৃত্রিম আনুগত্য থাকতে হবে এবং মেধাসম্পন্ন, পেশাগত দক্ষতা, সুক্ষ বিচারিক শক্তি ও ন্যায়পরায়ণ যারা কেবল তাদেরই সুপারিশ করা যাবে। তাছাড়া একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে সব যোগ্যতাসম্পন্ন ইচ্ছুক প্রার্থীদের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদনের সুযোগ দিতে হবে— লিখিত বক্তব্যে বলেন খোকন।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অনেক বিচারপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের গুঞ্জন আছে। বিচারপতি নিয়োগের পরে তদন্ত না করে নিয়োগের আগেই তাদের যোগ্যতা, সততা সম্পর্কে তদন্ত করে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। কেবল রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে কাউকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ করা কোনোভাবেই বাঞ্চনীয় নয়।

সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য শেষে একই জায়গায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগ দেবেন। ৯৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিভাগের বিচারক সংখ্যা সাময়িকভাবে বাড়ানো উচিত বলে মনে হলে তিনি যোগ্যতাসম্পন্ন এক বা একাধিক ব্যক্তিকে দুই বৎসরের জন্য অতিরিক্ত বিচারক নিযুক্ত করিতে পারবেন। কিন্তু আমাদের দেশে রেওয়াজ হচ্ছে ৯৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দুই বছরের জন্য অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়। দুই বছর পরে তাদের পারফরম্যান্স দেখে প্রধান বিচারপতি সুপারিশ করেন, সে অনুযায়ী তাদের কনফার্ম করা হয়।

এম আমিন উদ্দিন বলেন, একজন আইনজীবীর রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ বিচারপতির রায়ে নির্দেশনা আছে। সে নির্দেশনায় স্পষ্ট আছে, যারা দুই বছর অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োজিত আছেন, তাদের বিচারিক কার্যক্রম প্রধান বিচারপতি দেখবেন। অন্যান্য কার্যক্রম সরকার দেখবেন। এইভাবে কিন্তু হয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, সংবিধানের ৯৫ ও ৯৮ অনুচ্ছেদ অনুসরণ করে ও ১০ বিচারপতির রায়ের ম্যান্ডেট দেখে ভবিষ্যতে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে। সংবিধানের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে, এখানে কী করতে হবে। একমাত্র ম্যান্ডেট হচ্ছে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে, আলোচনা করতে হবে। সংবিধানেই যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে।

সাধারণ সম্পাদক যে নীতিমালার দাবি জানিয়েছেন, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, নীতিমালা তো সংবিধানের বাইরে যাবে না। নীতিমালা তো আইনও নয়। নীতিমালার বাইন্ডিং ইফেক্টও নেই। সংবিধানে বিধান স্পষ্ট আছে।

এ এম আমিন উদ্দিন মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর