শিশু হত্যাকারীদের কঠোর থেকে কঠোর সাজা পেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
১৮ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:১০
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের প্রতিটি শিশু যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। আর প্রত্যেকটা শিশুর জীবন যেন অর্থবহ হয়। সেটিই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। এটির অন্যায়-অবিচার কখনই বরদাশত করা হবে না। কাজেই যারা এ ধরনের শিশু নির্যাতন বা শিশু হত্যা করবে, তাদের কঠোর থেকে কঠোর সাজা পেতে হবে, অবশ্যই পেতে হবে।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এরপর দ্বিতীয় পর্বে মঞ্চর সামনে আসনে বসে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা চাই, আমাদের আর কোনো শিশু যেন কখনও এ ধরনের হত্যার সম্মুখীন না হয়। প্রতিটি শিশু যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। আর প্রত্যেকটা শিশুর জীবন যেন অর্থবহ হয়। সেটিই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
‘এটির অন্যায়-অবিচার কখনই বরদাশত করা হবে না। কাজেই আজকে যারা এ ধরনের শিশু নির্যাতন বা শিশু হত্যা করবে তাদের কঠোর থেকে কঠোর সাজা পেতে হবে। অবশ্যই পেতে হবে।’
সরকার প্রধান হিসেবে শিশুরা যেন ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজ না করে সেই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে তাদের বিভিন্ন শিক্ষাদীক্ষায় গড়ে তোলার লক্ষ্যে গ্রহণ ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সেগুলোও উল্লেখ করেন তিনি।
পাশাপাশি ঝরে পড়া শিশুদেরও শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা থেকে যারা এতিম; যাদের সমাজে কেউ দেখার নেই তাদের জন্যও বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শিশুদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা প্রতিবন্ধী বা যারা অটিজমে ভুগছে, এ শিশুদের তো কোনো দোষ নেই। আমি আজকে শিশুদের উদ্দেশে বলব, তোমরা যারা ছোট এখনও, তোমাদের আশেপাশে যখন দেখবা, কেউ প্রতিবন্ধী বা অটিস্টিক অথবা দরিদ্র তাদের কখনও অবহেলা করো না। তাদের আপন করে নিও, তাদের পাশে থেকো। তাদেরকে সহযোগিতা করো। কারণ তারাও তো তোমাদের মতনই একজন। কোনোভাবে তারা যেন অবহেলার শিকার না হয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই পড়েছি, কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না। আসলে এ সব বলা নিষ্ঠুরতা। এটি বলা অমানবিকতা। আমাদের শিশুরা নিশ্চয় তা করবে না।’
শিশুদের মনন প্রতিভা ও মেধা বিকাশে সরকারের পক্ষ থেকে খেলাধূলাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ সংগঠনটি গড়ে তোলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৮৯ সালে আমরা এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছিলাম। শিশুদের নিয়ে শিশু সংগঠন হিসেবে পাশে থাকার জন্য। সেই প্রতিষ্ঠানটি আজকে অনেক বড় হয়েছে এবং এই প্রতিষ্ঠানের অনেক ছেলে-মেয়ে আজকে কত বড় হয়ে গেছে। তারা অনেকেই জীবনের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। আজকে রনি ওখানে ঘোষণা দিচ্ছে, সে ব্যারিস্টার হয়ে এসেছে। ঠিক এরকমভাবে আমাদের শিশু-কিশোর পরিষদের অনেক ছেলে-মেয়ে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় তারা তাদের স্থান করে নিতে পেরেছে।’
সংগঠনের শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘সংগঠন করার মধ্য দিয়ে আরেকটি বিষয়, একটা দেশপ্রেম এবং কর্তব্যবোধ এবং অধিকারবোধ; এটাও কিন্তু থাকতে হবে। কারণ এই দেশটা আমাদের। এই দেশটাকে আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের মযার্দা পূর্ণ হিসাবে জাতি হিসাবে গড়ে উঠতে হবে।’
‘আমরা সরকারে আসার পর থেকে যে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছি। আজকের যারা শিশু বা এই মুহূর্তে যে শিশুটি জন্ম নেবে তার ভবিষ্যত যেন সুন্দর হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা অনেক পরিকল্পনা এরইমধ্যে প্রণয়ন করেছি।’