বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের বিচারে ট্রাইব্যুনাল দাবি
২২ অক্টোবর ২০১৯ ২১:৫৮
ঢাকা: বিএনপি-জামায়াত জোটের আগুন সন্ত্রাসের ঘটনায় চালক-সহযোগী হত্যাকাণ্ডের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তিনি এ দাবি জানান।
শাজাহান খান বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সাল আমরা ভুলে যাইনি। ২০১৫ সারে পেট্রোল বোমা দিয়ে পোড়ানো হয়েছিল ড্রাইভার আর হেলপারদের। এই কাকরাইলে গাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে ছিল বদর আলী বেগ। পেট্রোল বোমা মেরে বদর আলী বেগসহ গাড়িটা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ধরনের ৯২ জন ড্রাইভার-হেলপারকে পুড়িয়ে-পিটিয়ে-কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- শিক্ষিত মানুষ কেন ট্রাফিক আইন মানেন না, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আপনার নির্দেশে আমরা সেদিন বিএনপি-জামায়াতের লাগাতার অসহযোগ আন্দোলনকে প্রতিহত করেছিলাম। আমাদের ড্রাইভাররা জীবন দিয়েছে। এক হাজার গাড়ি পুড়েছে, তিন হাজার গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। আপনি ড্রাইভার ও মালিকদের সহযোগিতা দিয়েছেন। কিন্তু একটি দাবি আপনার কাছে করতে চাই, যারা এই ড্রাইভার-হেলপারদেরকে হত্যা করল, সাধারণ নাগরিক হত্যা করল, ৯২ জন চালক-হেলপার, ১৭ জন পুলিশ, তিন জন বিজিবি জোয়ান, দুই জন মুক্তিযোদ্ধা, দুই জন ব্যাংক কর্মচারী, গার্মেন্টস শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক, হকার, ফল ব্যবসায়ীসহ অসংখ্য শিশু-নারী পুড়িয়ে হত্যা করল, তাদের বিচার হবে না! এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না? এই বিচারটা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করে করা উচিত বলে আপনার কাছে দাবি করছি।
পরিবহন শ্রমিকদের দুঃখ, কষ্ট ও দুর্দশার কথা অনুভব করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শাজাহান খান বলেন, যে শ্রমিক (চালক) দিন-রাত পরিশ্রম করে, তার বিশ্রাম নেই, আহার নেই, দিনের পর দিন তাকে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। আপনি বলেছেন, পাঁচ ঘণ্টার বেশি কেউ গাড়ি চালাবে না। কিন্তু এই পরিমাণ ড্রাইভার কি আমাদের আছে?
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার বেড়ে গেছে— এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শাজাহান খান বলেন, অনেকে বলেন দুর্ঘটনা বাড়ছে। কিন্তু আমি তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে পারব, দুর্ঘটনার সংখ্যায় আমরা বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে অনেক পিছিয়ে। প্রমাণ করতে পারব, এখন বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমে এসেছে।
আরও পড়ুন- আমি বললেও দুই মাস মনে থাকে, ট্রাফিক পুলিশকে প্রধানমন্ত্রী
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পথচারীকেও সচেতন হতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এই শ্রমিক নেতা বলেন, দুর্ঘটনার জন্য কি এককভাবে আমাদের ড্রাইভার দায়ী? আমরা আপনার সঙ্গে একমত। তদন্ত করে বের করতে হবে, কে কতটুকু দায়ী। সেই দায়ী ব্যক্তিদের দায়ী করতে হবে। শুধুমাত্র ড্রাইভার কেন? ড্রাইভার যতটুকু দায়ী, সেই দায়দায়িত্ব ড্রাইভার নেবে।
শাজাহান খান আরও বলেন, রেল লাইনের ওপর দিয়ে হাঁটলে যদি রেলে কাটা পড়ে, সেই রেল গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে কি মামলা হয়? আপনি রাস্তায় মোবাইল ফোন নিয়ে হাঁটবেন, সেখানে দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়দায়িত্ব ড্রাইভারদের নিতে হবে? এটা হতে পারে না। হাইওয়েতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য টার্মিনাল নিমার্ণ করার পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ও নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।
ফাইল ছবি
অগ্নিসন্ত্রাস আগুন সন্ত্রাস জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ট্রাইব্যুনাল বিএনপি-জামায়াত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল শাজাহান খান