পূর্ণাঙ্গ উপজেলা বাস্তবায়নের দাবি জি এম কাদেরের
২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:৫৫
ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) এমপি বলেছেন, গ্রামীণ জনপদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা উপজেলা পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যে উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন করে দিয়েছিলেন সেই উপজেলা ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের বিকল্প নেই। কারণ উপজেলার কার্যকরী প্রাণশক্তি ছিল উপজেলা আদালত। যার মাধ্যমে তিনি বিচার ব্যবস্থা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলেন। এখন উপজেলা আছে কিন্তু সেখানে আদালত নেই। ফলে গ্রামীণ জনগণ প্রকৃত উপজেলার সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বুধবার (২৩ অক্টোবর) বনানীতে তার কার্যালয়ের মিলনায়তনে উপজেলা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সুনীল শুভ রায়, এস.এম. ফয়সল চিশতী, আলমগীর সিকদার লোটন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ছাত্রসমাজের সদস্য সচিব ফয়সল দিদার দিপু, শ্রমিক পার্টির সিনিয়র সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ শান্ত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি এস.এম. সোবহান, কৃষক পার্টির সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী, মুক্তিযোদ্ধা পার্টির আহ্বায়ক জাফরুল্লাহ মজুমদার।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাদের বলেন, ‘উপজেলা আদালত যে নেই- তা নয়, কিন্তু সেই আদালত বসে জেলা শহরে। ফলে বিচার প্রার্থীদের দূর-দূরান্ত থেকে আসতে হয় জেলা শহরে। উপজেলায় আদালত থাকলে উপজেলা সদর আবার প্রাণচাঞ্চল্যে ভরে উঠবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
উপজেলা প্রবর্তনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘এরশাদ একটি কল্যাণমুখী, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক গ্রামমুখী জনপ্রতিনিধত্বশীল প্রশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন। যা একটি মডেল হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে। এই উপজেলা প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের হৃদয়ে তার নাম লেখা হয়ে গেছে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন উপজেলা থাকবে। আর যতদিন এই উপজেলা থাকবে ততদিন ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন এরশাদ। এই উপজেলা জাতীয় পার্টির গর্ব। উপজেলাকে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাবো- আগামী দিনের সমৃদ্ধির পথে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অনন্য সৃষ্টির মধ্যে উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তন অন্যতম। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জনগণের কাতারে ছিলেন, আমরাও সারাজীবন সাধারণ মানুষের কাতারে থেকে রাজনীতি করব। ৯ বছরে শাসনামলে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উন্নয়নের যে কীর্তি গড়েছেন, তা এখনো পর্যন্ত কোনো সরকার করতে পারেনি। তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধি, মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, তিন নেতার মাজারসহ অসংখ্য রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল কাঠামোই তৈরি করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।’
জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বাংলাদেশের উন্নয়নের রাজনীতিতে কিংবদন্তি হয়ে থাকবেন। অমর হয়ে থাকবেন পল্লীর প্রতিটি মানুষের অন্তরে। এরশাদের প্রতি সাধারণ মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেঁচে থাকবে।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা নুরুল আজহার, সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মেজবাহ, যুগ্ম মহাসচিব সুলতান আহমেদ সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া, নির্মল দাস, মো. হেলাল উদ্দিন, এ কে এম আশরাফুজ্জামান খান, আমির হোসেন ভূঁইয়া, দফতর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, যুগ্ম দফরত সম্পাদক এম.এ. রাজ্জাক খান, যুব বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুরুল হক, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, মিজানুর রহমান, এনাম জয়নাল আবেদীন, আব্দুল আজিজ, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক যুগ্ম সম্পাদক সমুন আশরাফ, কেন্দ্রীয় নেতা আবু জামাল লিটন, ঝুটন দত্ত।
পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি জাতীয় শ্রমিক পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।