হ্যানয়ের ঢাকা মিশনের বাড়িভাড়ায় অনিয়ম, অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি
২৬ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৫৫
ঢাকা: ২০০৯ সালের মে মাস থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ৮ বছর ৩ মাসে ভিয়েতনামে বাংলাদেশ দূতাবাসের বাড়ি ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করা হয়। এ অনিয়মের কারণে সরকারের ৫১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) কার্যালয়ের করা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয় ‘দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলার কারণে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।’
ভিয়েতনামের হ্যানয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের আর্থিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সিএজি কার্যালয়ের করা নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য-প্রমাণ সারাবাংলা’র হাতে রয়েছে।
সারাবাংলা’র অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত ২০০২ সাল থেকে ২০০৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে হ্যানয়ের ঢাকা মিশন এক ঠিকানায় ছিল। পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালের মে থেকে দূতাবাসের ঠিকানা পরিবর্তন করা হয়, যা এখনও বহাল রয়েছে। ২০০৯ সালের মে মাসে ওঠা নতুন ঠিকানার বাড়ি ভাড়া চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে পানি, আবর্জনা নিষ্কাশন, ইন্টারনেট বিল ও রিপেয়ার চার্জ, ভিওআইপি ফোন, আই ফোন, ক্যাবল চার্জসহ আনুষঙ্গিক পরিসেবা পরিসেবা (ইউটিলিটি বিল) খরচ প্রতিমাসে ৬৫০ মার্কিন ডলার বাড়ির মালিক বহন করবে। এ খরচ ৬৫০ মার্কিন ডলারের বেশি হলে অতিরিক্ত অর্থ দূতাবাস বহন করবে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিগত ২০০৯ সালের মে মাস থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ৮ বছর ৩ মাস সময়ে ইউটিলিটি সেবার এই খরচ দূতাবাস থেকেই বহন করা হয়েছে। এতে সরকারের ৫১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসের এই আর্থিক অনিয়ম সিএজি’র পক্ষ থেকে জানানো হলে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ জবাবে বলে, ‘অডিট আপত্তি মোতাবেক তৎকালীন যারা দূতাবাসে এইচওসি এবং এইচওএম হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তাদের তালিকা অনুযায়ী অর্থ আদায়পূর্বক সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের নির্দেশসংক্রান্ত আপত্তিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা যেতে পারে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালের মে মাস থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন এম মারুফ জামান, সুপ্রদীপ চাকমা এবং মো সাহাব উল্লাহ।
এই বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
সিএজি কার্যালয়ের করা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ভিয়েতনামে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে যে, ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের আর্থিক নিরীক্ষায় কোটি টাকারও বেশি আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাষ্ট্রদূতের বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ব্যয়, ভ্রমণ খরচসহ মোট ৩১টি খাতে এ আর্থিক অনিয়ম পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন
হ্যানয়ে কোটার গাড়ি বিক্রয় ৪ সাবেক রাষ্ট্রদূতের, সংকটে দূতাবাস
হ্যানয়ের ঢাকা মিশনে কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম
অনিয়মের বাসা হ্যানয়ের ঢাকা মিশন