Monday 07 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাসিনা মহিউদ্দিনকে ‘অপমান’: মেয়র নাছিরকে ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম


২৮ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৩৬ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৩৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: সভামঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ায় হাসিনা মহিউদ্দিনের কাছে ক্ষমা চাইতে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদের একাংশ বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ আলটিমেটাম দেয়।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরের সমাবেশ থেকে এ আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর সহধর্মিনী ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনের সাথে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের ‘অনৈতিক শিষ্টাচার বর্জিত আচরণের’ প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এর আগে রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশে একটি কমিউনিটি সেন্টারে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৬টি জেলার সাংগঠনিক প্রতিনিধি সম্মেলন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনের মঞ্চে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন বসেছিলেন। এ সময় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আ জ ম নাছির উদ্দীন মঞ্চে বসা হাসিনা মহিউদ্দিনকে নামিয়ে দেন। যা দেখে মেয়রের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ করেন নগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর ও নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু।

আরও পড়ুন: মহিউদ্দিনের স্ত্রীকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দিলেন মেয়র নাছির

এর প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে নগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, নগরীর বিভিন্ন কলেজ শাখা ছাত্রলীগসহ কয়েকটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যোগ দেন।

সমাবেশে কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান মনসুর বলেন, ‘প্রত্যেকটি সাংগঠনিক সভার কিছু নিয়ম আছে, সেভাবেই সভা হয়। অথচ গতকালের প্রতিনিধি সভায় প্রয়াত নেতা আতাউর রহমান খান কায়সার, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ও এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীসহ সিনিয়র নেতাদের স্মরণ করা হয়নি। তাদের শ্রমে আর রক্তেই আজকের মহানগর আওয়ামী লীগ।’


তিনি আরও বলেন, ‘আমরা টাকার জোরে রাজনীতিতে আসিনি। স্কুল থেকে রাজনীতি করতে করতে এখানে এসেছি। আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। হাসিনা মহিউদ্দিন একজন নেত্রী, সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সভাপতির স্ত্রী এবং একজন মন্ত্রীর মা। তাঁকে ষড়যন্ত্র করে অসম্মানিত করা হয়েছে। তিনি ৪১ ওয়ার্ডের মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী। আমরা চাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হাসিনা মহিউদ্দিনের সাথে বসে আলোচনা করে এটার সমাধান করুন।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল বলেন, ‘হাসিনা মহিউদ্দিনকে অপমান শিষ্টাচার বর্হিভূত এবং পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। যে লজ্জাজনক কাজ তিনি করেছেন তার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রতিরোধ গড়ব। এরা মহিউদ্দিন চৌধুরীর কর্মী, তাদের থামানো যাবে না। রাজপথের রাজনীতি উত্তপ্ত করবেন না।’

শ্রমিক লীগ নেতা আবুল হোসেন আবু বলেন, ‘প্রতিনিধি সভার মঞ্চে হাসিনা মহিউদ্দিন ঠাঁই পান না, কিন্তু নির্ধারিত তালিকার বাইরে অন্য যাদের ঠাঁই হয় তারা কারা। মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের রাজনীতির আঁতুর ঘর।’

আরও পড়ুন: দুর্ব্যবহার নয়, শৃঙ্খলা রক্ষায় মঞ্চ থেকে নামতে বলেছি: নাছির

ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরীর উপর আঘাত আসলে কি হয় সেটা দেশবাসী ১৯৯৬ সালে দেখেছে। আপনি বলুন কত রক্ত চান, ঘোষণা দিন। আমরা রাজপথে আছি।’

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য উম্মে হাবিবা বলেন, ‘এটা হাসিনা মহিউদ্দিনের নয়, মহিউদ্দিন চৌধুরীর অপমান। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে এলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় যান। এ অপমান আমরা মানব না।’

যুবলীগ নেত্রী আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘এটা শুধু হাসিনা মহিউদ্দিনের অপমান নয়, একজন নারীর অপমান।’

নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘উনার এ অপমান আমরা মেনে নিতে পারি না। অনেককে দেখেছি স্টেজে বসেছিল, তারা ফেসবুকে ছবি দেয়। আর হাসিনা মহিউদ্দিনকে নেমে যেতে হয়! মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবার আমাদের আবেগের আশ্রয়স্থল, একে অপমান করা হয়েছে।’

নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরূল আজিম রনি বলেন, ‘আজকের সমাবেশ শুধু অপমানের প্রতিবাদে নয়, এ সমাবেশ দানব মুক্তির সমাবেশ। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে অপশক্তি অবসানের সমাবেশ। সুষ্ঠু, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার সমাবেশ।’

তিনি বলেন, ‘গত তিন-চার বছর ধরে চট্টগ্রামে যে খুনের রাজনীতি হচ্ছে… সুদীপ্ত খুন হয়েছে, দিয়াজ খুন হয়েছে, নাসিম আহমেদ সোহেল খুন হয়েছে। কোনো খুনের বিচার হয়নি। এসব খুনিদের গডফাদার একজন।’

রনি আরও বলেন, ‘আজ নেত্রীর কাছে নিবেদন চট্টগ্রামের রাজনীতি থেকে গডফাদার নির্মূল করুন। অপশক্তির নির্মূল করুন।’

মেয়রের উদ্দেশে বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করব। ক্ষমা চাইবেন। তা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন, এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমতাজ বেগম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক মো. আবু সাঈদ সুমন, নগর ছাত্রলীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মো. বিন ফয়সাল, সহ-সভাপতি রোমেল বড়ুয়া রাহুল, সৌমেন বড়ুয়া, ছাত্রলীগ নেতা একরামুল হক রাসেল, ফরহাদুল আলম রিন্টু প্রমুখ।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

২৪ ঘণ্টা সময় আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রাম মেয়র হাসিনা মহিউদ্দিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর