‘মুজিববর্ষেই পদ্মাসেতু উদ্বোধন, সুনির্দিষ্ট তারিখ বলা যাবে না’
২৯ অক্টোবর ২০১৯ ২০:৪০
ঢাকা: আগামী ২০২০ সালে মুজিববর্ষেই পদ্মাসেতু উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এর সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ এই মুহূর্তে জানানো সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতু হাইলি টেকনিক্যাল একটি কাঠামো। সুনির্দিষ্ট ময়সীমা বেঁধে দিয়ে এই কাজ করা যায় না। পৃথিবীতে অ্যামাজনসহ যতগুলো খরস্রোতা নদী আছে, কোনো নদীর ওপর আজ পর্যন্ত কেউ কোনো ব্রিজ করতে পারেনি। কিন্তু আমরা এটা সাহস করে করছি। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জন্মশতবার্ষিকীর সময়ই এটা চালু হবে। তবে এর কোনো সুর্নিদিষ্ট তারিখ বলা যাবে না।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ন্যাম সম্মেলনে যোগদান পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেগা প্রকল্পের অন্যতম পদ্মাসেতু নিয়ে জানতে চাওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। জবাবে তিনি বলেন, পদ্মাসেতু তৈরির টেকনিক্যাল কাজগুলো খুবই কষ্টকর। এখানে একটি দোতলা ব্রিজ হচ্ছে। নিচে ট্রেন, ওপরে গাড়ি। এ কারণে এর প্রযুক্তিটিই একদম ভিন্ন। পৃথিবীর তিন থেকে চারটি ব্রিজ এভাবে তৈরি হয়েছে। আর আমাদের যেটা সমস্যা হয়ে যায়, একেকবার বর্ষার পরই নদীর ক্যারেক্টার বদলে যায়।
তারপরও সরকার মুজিববর্ষের মধ্যেই পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ বলা যাবে না। তবে জন্মশতবার্ষিকীর সময়েই এটা চালু হবে।
মুজিববর্ষে বিদেশে পলাতক জাতির পিতার সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না— এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, কে কোথায় আছে, সে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি। তাদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, এটি একটি সমস্যা। কারণ পৃথিবীর অনেক দেশই মৃত্যুদণ্ড কার্যকারের বিরুদ্ধে। ওই ছুতা ধরেই কেউ কেউ গিয়ে থেকে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তখন তিনি ওটাই বলেছিলেন। কারণ তারা সবাই চায়, তারা ফিরে আসুক। কিন্তু তারা নির্ভর করে তাদের আদালতের রায়ের ওপর। সমস্যাটা এখানেই। আমি আশাবাদী, হয়তো আরও কয়েকজনকে আমরা ফিরিয়ে আনতে পারব।
বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনীদের বিচার করা কত কঠিন ছিল, সে প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিচার করাই যাবে না— আইনই করা হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে আইন পরিবর্তন করে এনে বিচার করা, শাস্তি কার্যকর করা— সবই আমরা করেছি। দেশের খুনের বিচারের কথা সবাই বলেন। আমি আমার মা-বাবা, ভাই-বোন হারালাম। আমি ঢাকায় যখন ফিরে এলাম, তখন মামলা করতে পারব না। কেন? ইমডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে খুনিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা যারা ১৫ আগস্ট সব হারালাম, কারও বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। ক্ষমতায় এসে সে অধিকারটা আমাদের তৈরি করতে হলো।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশে খুনিদের রাজত্ব কায়েম করা, দুর্নীতি— সবকিছুর মূল ওই জায়গা থেকে চলে এসে এখান একটা বিষবৃক্ষের মতো আমাদের সমাজকে খেয়ে ফেলেছে। সেই জায়গা থেকে সমাজকে রক্ষা করা, দেশটাকে রক্ষা করা— সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।