Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘যে সুবিধা দিচ্ছি, অনেক দেশই তা দিতে পারবে না’


৩০ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:৪৮

ফাইল ফুটেজ

ঢাকা: বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যা অনেক দেশ দিতে পারবে না। তাই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিনদিনের চামড়াজাত পণ্য প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিদেশি ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পখাতে বিশেষকরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের শিল্পে বিনিয়োগ করবেন। যেকোন দেশের চাইতে এখানে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভবান হবেন। এটুকু আমি বলতে পারি। কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিচ্ছি, যা অনেক দেশ দিতে পারবে না।’

প্রধানমন্ত্রী টানা মেয়াদে তার সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, আমরা কিভাবে এই অর্জনটা করলাম। আমাদের রাজনৈতিক দল হিসাবে নির্বাচনী ইশতেহার রয়েছে। গত নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা রফতানির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জাতীয় আয় বাড়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এ লক্ষ্যে রফতানি নীতি ২০১৮ -২০২১ বাস্তবায়ন করছি। এর আগে এক বছর করা হত। এখন আমরা লং টার্ম প্রক্রিয়া নিয়েছি।

এই অর্থবছরে ৩৬টি পণ্যের উপর ২০ শতাংশ নগদ সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা বাড়ানো হয়েছে। ফলে রফতানিতে আয় বাড়ছে বলেও অবহিত করেন তিনি।

২০১৯-২০ অর্থবছরের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫৪ বিলিয়ন ডলার ধরা হয়েছে। রফতানি বহুমুখীকরণ করতে পারলে যে প্রবৃব্ধি আমরা অর্জন করেছি সেটা আরো বাড়াতে পারা সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, রফতানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আমাদের ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা ২০২১ সালে রফতানি থেকে আয় ৬০ বিলিয়ন ডলারে ছাড়িয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

বিনিয়োগ ব্যবসা এবং রফতানি বাণিজ্যকে সহজ এবং গতিশীল করতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সুবিধার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি। যার মধ্যে ১২টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। অর্থ্যাৎ বিদেশি বা দেশি বিনিয়োগ দুই ধরণের বিনিয়োগের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে জায়গা করে দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের জন্য এরইমধ্যে একাধিক টার্মিনাল ও নতুন নৌ বন্দর স্থাপনের কাজ শুরু করেছি। আঞ্চলিক যোগাযোগ কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা বাংলাদেশের রয়েছে। আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানটাই হচ্ছে প্রাচ্য প্রাশ্চাত্যের মধ্যে একটা ব্রীজ হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করা।

রফতানি বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, হাজারীবাগে ট্যানারি স্থানান্তর করে আধুনিক শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। চামড়াজাত দ্রব্য ও পাদুকা রফতানিকারকদের সঙ্গে বিশ্বের আমদানিকারকদের যোগাযোগ ঘটানোর জন্য আমরা ইকোনমিক ডিপ্লোমেসির উপর জোর দিয়েছি। ফলে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য পাদকুা শিল্প গত এক দশকে পাট ও পাটজাত পণ্যের চেয়ে রফতানি আয় ছাড়িয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি আয়ের খাত হিসাবে পরিণত হয়েছে। এখন এ খাতের আয় তৈরি পোশাকের পরেই জায়গা করে নিয়েছি। গত অর্থবছরে এখান থেকে প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে।

চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা শিল্প থেকে কাঙ্খিত রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আর্থিক প্রণোদনা আরও অন্তত আগামী ৫ বছর বহাল থাকবে। সাভারে চামড়া শিল্পনগরীর বর্ধিত প্রকল্পের আন্তর্জাতিক মান ও এলডব্লিউজি সনদ অর্জন উপযোগী কম্পোজিট চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা কারখানা গড়ে তোলার জন্য কমপক্ষে ১৫০ একর জায়গা আমরা বরাদ্দ দেব। এরইমধ্যে আমরা জায়গা দেখেছি। সকল রফতানি খাতের জন্য সমান সুযোগ ও নীতিগত সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। যে সকল বৈষম্য ও প্রতিবন্ধকতা আছে, সেগুলোও দূর করে দেব।

বিজ্ঞাপন

আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে উঠবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদারগুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর