ধানমন্ডিতে জোড়া খুন: আসামি সুরভীকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ
৪ নভেম্বর ২০১৯ ২৩:০২
ঢাকা: রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় আফরোজা বেগম ও তার গৃহকর্মী দিতিকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি সুরভী আক্তারকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
সোমবার (৪ নভেম্বর) পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে সুরভী জানিয়েছে, সে ওই এলাকার একটি পানের দোকানীর পরিচিত। আফরোজা বেগমের মেয়েজামাই কাজী মনির উদ্দিনের বডিগার্ড আতিকুল হক বাচ্চু ওই পান দোকানীর কাছ থেকে নিয়মিত পান কিনতেন। পূর্বপরিচয় থাকায় পানওয়ালা মেয়েটির জন্য বাচ্চুকে গৃহকর্মীর কাজ ঠিক করে দিতে বলেন। বাচ্চু আফরোজা বেগমকে জানিয়ে মেয়েটিকে শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে কাজের জন্য আসতে বলেন।
ধানমন্ডিতে জোড়া খুন: গৃহকর্মীকে ধরতে তৎপর পুলিশ
পুলিশ আরও জানায়, সুরভী শুক্রবার দুপুরে আফরোজা বেগমের বাড়িতে কাজের জন্য যায়। আফরোজা বাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে থাকতেন। তবে সে সময় তিনি পাঁচতলায় তার মেয়ে দিলরুবার ফ্ল্যাটে ছিলেন। বাচ্চু সুরভীকে গেট থেকে রিসিভ করে সরাসরি পাঁচ তলায় নিয়ে যান। এরপর আফরোজা, গৃহকর্মী দিতি, সুরভী এবং বাচ্চু একসঙ্গে চারতলার ফ্লাটে আসেন।
ফ্লাটে ঢুকেই আফরোজা বেগম প্রথমে সুরভীকে বেডরুমগুলো দেখান এবং রাত থেকে কাজ করতে হবে এমন শর্তে তাকে নতুন গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রথম দিনের কাজ হিসেবে সুরভী কাপড় ধুয়ে রাখেন। দুপুরে তাকে ভাতও খেতে দেওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সুরভী পুলিশকে জানিয়ে, ঘরের কাজ শেষ করে একপর্যায়ে সে বাইরে যেতে চায়। তবে আফরোজা বেগম তাকে ঘরের বাইরে বের হতে না দিয়ে বলে ‘তোকে যে এনেছে (বাচ্চু), সে আসলে তুই যেতে পারবি।’ একপর্যায়ে দিতি ফ্লাটের মেইন গেটে তালা মেরে দেন, যেন সুরভী বের না হতে পারেন।
সুরভী আরও জানিয়েছে, ‘সে ফ্লাট বাসায় ভয় পাচ্ছিল, তাকে পাচার কিংবা অন্য কোনো অনৈতিক কাজে জড়ানো হয় কি না। সন্ধ্যায় গৃহকর্মী দিতি যখন ফ্লাটের একটি বেডরুম ঝাড়ু দিচ্ছিল তখন ছুরি দিয়ে পেছন থেকে দিতির পিঠে পোচ দেয় সুরভী। এরপর দিতির গলায় পোচ দেয়। একইভাবে আরেক বেডরুমে থাকা আফরোজা বেগমের গলায় পোচ দিয়ে গেটের তালা খুলে পালিয়ে যায়।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, এ ঘটনার পর সুরভী পালিয়ে তার আগারগাঁওয়ের বস্তির বাসায় যায়। এরপর মিরপুরে এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করে। রোববার (৩ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সুরভী আগে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। মানসিক অশান্তির কারণে সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে দেয়।
আফরোজা বেগম ও দিতিকে হত্যার ঘটনায় পুলিশ সুরভীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। বাকি চারজন হল- কাজী মনির উদ্দিনের বডিগার্ড আতিকুল হক বাচ্চু, বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড নুরুজ্জামান, কেয়ারটেকার বেলাল ও প্রিন্স।