‘সরকারি হিসাবে’ ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লো
৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:৩৬
ঢাকা: বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সব পরিসংখ্যান। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেছে আগের সেই রেকর্ড। এর আগে, ২০০০ সালে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ৯৩ জন রোগী মারা যায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। সেই পরিসংখ্যান ছিল পুরো বছরের। এ বছরে এসে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ১১২ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার এ তথ্য জানান।
আইইডিসিআরের প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৯ সালে ২৫১ জনের ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার তথ্য পেয়েছে ‘ডেথ রিভিউ কমিটি’। এর মধ্যে ১৭৯টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১১২ জন মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর। এই ১১২ জনের মধ্যে এপ্রিলে দুই জন, জুনে ছয় জন, জুলাইয়ে ৩৫ জন, আগস্টে ৬০ জন ও সেপ্টেম্বরে চার জন মারা গেছেন।
এর আগে, ২০০০ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সে বছর মারা গিয়েছিলেন ৯৩ জন। ২০০১ সালে ৪৪ ও ২০০২ সালে ৫৮ জন মৃত্যুবরণ করেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। এছাড়া ২০০৩ সালে ১০ জন, ২০০৪ সালে ১৩ জন, ২০০৫ সালে চার জন, ২০০৬ সালে ১১ জন মারা যান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে। ২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও ২০১১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৬৩ জন মৃত্যুবরণ করেন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানিয়েছেন, সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন ৭৫ জন। আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১৪ জন। সবমিলিয়ে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৯ জন। বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩৩৭ জন এবং ঢাকা মহানগরীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৭৭ জন।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৭ হাজার ৯ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ৯৮.৯ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
রোগীর সংখ্যা কমে আসা বিষয়ে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি বর্তমানে ঢাকায় তুলনামূলকভাবে ভালো বলা যায়, রোগীর সংখ্যা কমে আসছে ক্রমান্বয়ে। তবে ঢাকার বাইরের কারণে ডেঙ্গু পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য।
এদিকে, , সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগের জেলা শহরগুলোতে ২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৮ জন, খুলনা বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে তিন জন, রাজশাহী বিভাগে চার জন, বরিশাল বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে দুই জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।