‘বুলবুলে’ ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার ১৫ ভাগ ফসলি জমি
১০ নভেম্বর ২০১৯ ২২:০৪
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে উপকূলীয় এলাকার ১৬ জেলায় রোপা আমনসহ ১৮টি ফসলের ২ লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। প্রাথমিক হিসেবে আক্রান্ত ফসলের পরিমাণ ১৫ ভাগ। তবে আক্রান্ত জমির পুরো ফসল ক্ষতির মুখে পড়বে না বলে প্রত্যাশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের।
প্রতিষ্ঠানটির সরেজমিন উইংয়ের তথ্যমতে, এবার ৬৪ লাখ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১০ শতাংশ জমির ধান পাকতে শুরু করেছে। আর উপকূলীয় ১৬ জেলায় ১৭ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। বুলবুলে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ শতাংশ জমির ধান। অন্যান্য ফসলসহ ১৩ জেলায় দণ্ডায়নমান জমির পরিমাণ ১৮ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর। শতাংশের হিসবে বুলবুলে ক্ষতির পরিমাণ ১৫ শতাংশ।
এছাড়া ১৬ জেলায় শীতকালীন সবজি জমির পরিমাণ ২৬ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ১৪ হাজার হেক্টর। আর ফসলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠি জেলায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক চন্ডী দাস কুণ্ডু সারাবাংলাকে বলেন, ‘আক্রান্ত জমির রোপা ধান যদি পেকে থাকে তাহলে তা দ্রুত কেটে ফেলতে হবে। আর যদি আধা পাকা থাকে তাহলে ধানের কয়েকটি গোছা একসঙ্গে করে ঝুঁটির মতো করে বেঁধে দিতে হবে।’
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল সারাবাংলাকে জানান, তার এলাকায় ধানি ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৫০ ভাগ।
জেলার কৃষক সুমন বলেন, ‘আর কয়েক দিন গেলেই ধান উঠে যেত। কিন্তু শেষ সময়ে ঘূর্ণিঝড়ে পুরো ক্ষেত নুয়ে পড়েছে। এতে ফসলের উৎপাদন অনেক কমে যাবে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১৫ ভাগ ফসলি জমি আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত জমির পুরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কোনো কোনো জমির ফসল আংশিক ক্ষতি হয়েছে। আবার ধানের বড় অংশটিই পরিপক্ক হয়ে উঠেছিল। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পুরো হিসাব আমরা দিতে পারবো।’
প্রণোদনা বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান ফসল আমন। বুলবুলের কারণে রবি মৌসুমের প্রণোদনায় দক্ষিণাঞ্চলকে এবার প্রাধান্য দেওয়া হবে। নিয়মিত পোগ্রামের আওয়াতায় ওই এলাকায় ভুট্টা-মুগডালে অধিক প্রণোদনা দেওয়ার লক্ষ্য ছিল।’ বুলবুলের প্রভাবে যেসব এলাকা বেশি আক্রান্ত হয়েছে সেই অঞ্চলকে এখন আরও বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।