সেগুনবাগিচার মানুষের পাশে থাকব: গোলাম দস্তগীর গাজী
১১ নভেম্বর ২০১৯ ২২:২০
ঢাকা: সুখে-দুঃখে সবসময় সেগুনবাগিচার মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক।
তিনি বলেন, ‘১৯৭৭ সালে আমি এই এলাকার কাউন্সিলর ছিলাম। স্বাধীনতার পর প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলাম। বহু আগে থেকেই সেগুনবাগিচাকে অভিজাত এলাকা হিসেবেই জানি। এখনও সেগুনবাগিচা সেই আভিজাত্য ধরে রেখেছে। আপনারা (সেগুনবাগিচার বাসিন্দা) যেকোনো কাজে আমাদের কাছে আসবেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।’
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে সেগুনবাগিচা সোসাইটির যুগ পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সেগুনবাগিচার কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়। মন্ত্রী তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
দেশের এগিয়ে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আমরা ছোটবেলায় খালি পায়ে স্কুলে গিয়েছি। আমাদের মুরব্বিদের সামর্থ্য ছিল না জুতো কিনে দেওয়ার। তখন শুধু ঈদের সময় এক জোড়া জুতো কিনে দিত, সেটা দিয়ে ছয় মাস চলতে হতো। তারপর আবার খালি পায়ে স্কুলে যেতাম, স্যান্ডেলও পেতাম না। আর আজকের ছেলেমেয়েরা কোথায়? গ্রামেও কোনো ছেলেমেয়ে খালি পায়ে স্কুলে যায় না। দেশ এখন কোথায় চলে গিয়েছে, সেটা ভাবতে হবে। ইতিহাসকে মনে রাখাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পাসপোর্ট এখন সম্মানীয় পাসপোর্ট হয়ে গেছে। পাকিস্তানের চেয়ে এখন আমাদের অর্থনীতি অনেক এগিয়ে গেছে। আগের তাদের চেয়ে আমাদের টাকার মূল্য কম ছিল। এখন হয়েছে উল্টো। পাকিস্তানে এখন এক ডলার ১৬৫ টাকা, আর বাংলাদেশে ৮৪ টাকা। টাকার মূল্যের দিক থেকে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। পাকিস্তানে এখন ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। আর আমাদের এখন চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ আছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আমরা চাকরি পেতাম না, হতাশ হয়ে ছিলাম। থানার ওসি ছিল পাঞ্জাবি, কনস্টেবল ছিল মিরপুর আর মোহাম্মদপুরের বিহারিরা। বাঙালিরা তখন কনস্টেবলও হতে পারত না। এই অবস্থার মধ্যে আমরা দিন কাটিয়েছি। কাজেই ইতিহাসকে স্বীকার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাওয়ার সত্যতাও উপলব্ধি করতে হবে।’
সেগুনবাগিচাকে ঘিরে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘১৯৬৪ সালে পুরনো শহর থেকে আমরা সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় চলে আসি। তখন এখানে যাতায়াত ছিল আমাদের। সংগীতের সঙ্গেও কিছুটা জড়িত ছিলাম। তখন এই এলাকা খুব নিরিবিলি ছিল, সন্ধ্যার পর কেউ এখানে হাঁটাহাঁটি করত না। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে অভিজাত এলাকা থাকলে এখনো সেটি সেগুনবাগিচাই। কারণ ধানমন্ডিতেও এত বড় রাস্তা নেই। এখানেও অনেক উঁচু ভবন হয়েছে। তবু মনে হয় এই এলাকা অত্যন্ত ভদ্র এলাকা।’
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, পাকিস্তান আমল থেকেই এখানে অভিজাত মানুষের বসবাস ছিল। এখনো অভিজাত মানুষেরাই এখানে বসবাস করেন। আমাদের যে টেলিভিশনের ভবন, সেখানে যে পুরনো বাড়িটা ছিল, সেখানে বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলে এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা ছোট সাইকেল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতেন। এখনো এই এলাকায় সেই আভিজাত্য বজায় আছে।
সেগুনবাগিচা সোসাইটির সভাপতি এ কে এম জব্বার ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতনসহ অন্যরা।
গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী সেগুনবাগিচা