৭২৩ কোটি টাকায় সোজা হচ্ছে মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁক
১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:০৬
ঢাকা: মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁক সোজা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সড়কটি উন্নয়নের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এজন্য ‘মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁক সরলীকরণসহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়িত হলে নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটির খরচ ধরা হয়েছে ৭২৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ২৬ জুন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাগুরা ও নড়াইল সড়ক বিভাগের মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কটি মাগুরা জেলার ঢাকা বাস স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে নড়াইল জেলা সদরের কেন্দ্রে মিলিত হয়েছে। এই সড়ক পথে মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, যশোর ও ফরিদপুর জেলার জনসাধারণ আন্তঃজেলা এবং দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াত করে থাকে। এই মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৩৪২ কিলোমিটার এবং বিদ্যমান প্রস্থ ১৮ ফুট। সড়কের মাগুরা অংশের বেশ কয়েকটি স্থানে বিপজ্জক একাধিক বাঁক রয়েছে। এসব স্থানে দুর্ঘটনায় জানমালের ক্ষতি হয়। এ জন্য মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বিপজ্জনক বাঁকগুলো সরলীকরণসহ যথাযথ মানে উন্নীত করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ৫২৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ২ জুলাই প্রকল্পটির প্রস্তাব পাঠানো হয়।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ডিপিপিতে সড়কের দৈর্ঘ্য ৪৮ দশমিক ৬৫২ কিলোমিটার নির্ধারণ করে মোট ৮১৬ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়। এর ওপর চলতি বছরের ২৪ মার্চ পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রকল্পটি নিরূপণ এবং প্রধান প্রধান অংশের পরিমাণ ও ব্যয় আলোচনা প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ভৌত অবকাঠামো বিভাগের যুগ্মপ্রধানের (সড়ক পরিবহন উইং) আহ্বানে গঠিত পরিদর্শন কমিটি প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে গত ২৭ মে প্রতিবেদন পেশ করে।
ওই পরিদর্শন প্রতিবেদন ও প্রস্তাবিত ডিপিপির ওপর চলতি বছরের ২৬ জুন পুনরায় পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্তে সড়ক পরিহণ ও মহাসড়ক বিভাগ ডিপিপি পুনগঠন করা হয়েছে। পুর্ণর্গঠিত ডিপিপিতে ৪৭ দশমিক ১ কিলোমিটার সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীত করতে ৭২৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ভূমি অধিগ্রহণ, সড়ক বাঁধে মাটির কাজ, নতুন সড়ক নির্মাণ, বিদ্যমান সড়ক মজবুতিকরণ, বিদ্যমান সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ, সার্ফেসিং, হার্ড শোল্ডার নির্মাণ, বাঁক সরলীকরণ, রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ, আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, রোড মার্কিং, নির্মাণকালীণ রক্ষণাবেক্ষণ, সসার ড্রেন নির্মাণ, রক্ষাপ্রদ কাজ, বাস-বে নির্মাণ এবং ইন্টারসেকশন উন্নয়ন।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মাগুরা ও নড়াইল জেলার মধ্যে উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে এবং প্রকল্প এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।