‘অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনের কিডনি প্রতিস্থাপনে সংস্কার প্রয়োজন’
২০ নভেম্বর ২০১৯ ২৩:২৩
ঢাকা: মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশি রোগীরা কেবলমাত্র কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রায় ৮শ কোটি টাকা বিদেশে ব্যয় করেন।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ২০১৮ সালে সংশোধিত মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন, ১৯৯৯ এর অসঙ্গতি তুলে ধরতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১০ হাজার মানুষের কিডনি পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। কিডনি প্রতিস্থাপনের বিপরীতে আমাদের দেশে ডায়ালাইসিস দেওয়া হয়, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আমাদের দেশে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। কিডনি ডায়ালাইসিসে প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ হয় মাত্র দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। কিডনি প্রতিস্থাপনের পরে এক বছর পর্যন্ত প্রতিমাসে দুই হাজার টাকার ওষুধের প্রয়োজন হয়। যদি ১৯৮২ সালের ওষুধ নীতি বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে ওষুধের খরচ ৫শ টাকায় নেমে আসবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানুষের আয়ুষ্কাল বেড়েছে। অথচ আইনে দেখা যায়, কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে দাতা ও গ্রহীতার বয়স ৬৫ থেকে ৭০ বছরে সীমিত করা হয়েছে।
আইনে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, পৃথিবীর দুটি দেশের আইনে এ ধরনের সংকীর্ণতা রয়েছে। একটি পাকিস্তান এবং অন্যটি মিশর। আমরা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে এদের অনুসরণ করেছি। অথচ ইউরোপ, আমেরিকার মতো সৌদি আরব ও ইরানে জনমুখী আইন রয়েছে। ইরানে যে কোনো মানুষ কিডনিসহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দাতাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিপুল পরিমাণ আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ২০২০ সাল থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া শুরু করে। বর্তমানে প্রায় ১০ জন সার্জন রয়েছেন দেশে। প্রতিস্থাপন চালু হলে এ সংখ্যাকে ১শ’ জনে দাঁড় করাতে এক বছর সময় লাগবে।