‘এটিই শেষ সুযোগ, সন্তানরা মাঠে নামলে পিঠের চামড়া থাকবে না’
২১ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৪৭
ঢাকা: নতুন সড়ক পরিবহন আইন ফলপ্রসূ করার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে না পারলে আমাদের যাওয়ার কোনো পথ থাকবে না। এটিই শেষ সুযোগ। এবার আমাদের সন্তানেরা মাঠে নামলে পিঠের চামড়া থাকবে না। আমি পুলিশ কমিশনারই হই, আর আপনি পরিবহন নেতা যেই হোন না কেন কেউ রেহাই পাবো না। কাজেই সবাইকে শৃঙ্খলা মানতে হবে। যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে ট্রাফিক সচেতনতা পক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার এ সব কথা বলেন।
গাড়ি রেকারিংয়ের বিষয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একমাত্র যে গাড়িটি রাস্তায় পাওয়া যাবে, সেই গাড়ির মালিক বা চালককে খোঁজা হবে। না পেলে সেই গাড়িটিকে রেকারিং করা হবে। এর বাইরে কোনো গাড়ি রেকারিং করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘রাস্তায় আমরা যারা নামি তাদের প্রত্যেকই সবার আগে যেতে চাই। বাকিরা পেছনে পড়ে থাকে- সবার এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সবাইকে আইন মানতে হবে। আইনকে শ্রদ্ধা করে স্ব স্ব জায়গা থেকে আইন মানতে হবে।’
চালকদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমার আপনার কারণে এমন একজন মারা গেল, যে পরিবারে দুজন শিশু রয়েছে। তাদের খাবার দেওয়ার কেউ নেই। আমরা সবকিছু আলোচনা করে সমাধান করতে পারব। কিন্তু একজন সন্তানের চোখের পানির দাম কেউ দিতে পারব না। অরাজক পরিস্থিতি আর কতদিন মানবেন? এ অরাজকতার কারণে অনেক চালক এভাবে চলে গেছেন। তাদের পরিবারেও কেউ না কেউ আছে। কেউ তাদের খোঁজ নিয়েছেন? তাদের মা, স্ত্রী-সন্তান হয়ত কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাই আসুন আমরা সবাই শৃঙ্খলা মেনে চলি।’
ট্রাফিক পক্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ১৫ দিন আমরা শৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলব। পেশাজীবী, চাকরিজীবী, শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থী, চালক, হেলপার, মালিক সবার সঙ্গে কথা বলব। এটিই আমাদের শেষ সুযোগ। আমরা চাই, আমাদের সন্তানদের যেন মাঠে নামতে না হয়। এবার তারা মাঠে নামলে আমাদের পিঠের চামড়া রাখবে না। তখন আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না।’
ট্রাফিক পক্ষের আলোচনা সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা শহরে আমরা ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নানামুখি কাজ করে যাচ্ছি। এবারের ট্রাফিক পক্ষে আমরা ৪৫টি স্লোগান সবার কাছে পৌঁছাব। সবাইকে সচেতন করতেই এই উদ্যোগ। মূল সড়কে যেন রিকশা চলতে না পারে সে জন্য কয়েকটি জোনে ভাগ করে তাদের পোশাক দিয়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। ঢাকায় ১৫১টি সিএনজি পাম্প স্টেশন রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হবে। নির্দেশনার বাইরে কাউকে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে না।’