‘যারা আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছিল, তারাই দিয়াজের হত্যাকারী’
২১ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে স্মরণ করলেন তার সতীর্থরা। এসময় তারা অভিযোগ করেন, দিয়াজের লাশ উদ্ধারের পর যারা আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছিল, তারাই দিয়াজকে খুন করেছে, তারাই দিয়াজের হত্যাকারী।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে এই স্মরণসভা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ব্যানারে এই স্মরণসভায় সতীর্থ নেতাকর্মীরা দিয়াজের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।‘
স্মরণসভায় চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক আমির সোহেল বলেন, ‘চবি একসময় জামাত শিবিরের দখলে ছিল। জামাত শিবিরের সরিয়ে চবিতে ছাত্রলীগ অবস্থান নিতে সক্ষম হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেন দিয়াজ ইরফান চৌধুরী। এই ছাত্রনেতার এমন ন্যাক্কারজনক মৃত্যুর ধিক্কার জানায়। এই হত্যার রহস্য উন্মোচন করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। ব্যক্তিকে হত্যা করা যায়, কিন্তু আদর্শ হত্যা করা যায় না। দিয়াজ ইরফান চৌধুরীও আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন।’
সাবেক পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক আবু বকর তোহা বলেন, ‘এটা একটা পরিকল্পিত হত্যা। যারা এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছে, তারাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। আমরা চাই হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে। আসামিরা চিহ্নিত হবে, তাদের শাস্তি হবে।‘
চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মাহবুবুর রহমান বিজয়ের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক আবু সাঈদ মারজান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. শামীম, সাবেক উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল সুমন, সাবেক উপ ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক অপূর্ব নন্দী টিটু, সাবেক সহ-সম্পাদক আবু হেনা মাসুম কামাল, আবির ও মাসুদসহ অনেকে।
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় ভাড়া বাসায় নিজ কক্ষ থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দিয়াজের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলা হয়। কিন্তু তার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, আত্মহত্যা নয় দিয়াজকে খুন করা হয়েছে।
ঘটনার পর ২৪ নভেম্বর জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, বিলুপ্ত কমিটির প্রচার সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান, ছাত্রলীগ কর্মী আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আব্দুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। মামলাটির তদন্ত করছে সিআইডি।