Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জলাবদ্ধতা প্রকল্পের বরাদ্দ প্রয়োজনে বাড়ানোর সুপারিশ করা হবে’


২২ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:৫৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছেন জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস শহীদ। তিনি প্রয়োজনে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর প্রবর্তক মোড়ে চলমান প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। দুই বছর আগে নেওয়া এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষের আগেই বরাদ্দ বাড়ানোর এই আশ্বাস এসেছে।

বিজ্ঞাপন

পরিদর্শনের সময় প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, ‘কাজটা ভালো হতে হবে। মান ঠিক রাখতে হবে। যদি আপনারা মান ঠিক রাখতে পারেন, কাজটা যদি হয়, যদি আপনারা বলেন যে, এখানে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এখানে আরও টাকা লাগবে, ১০০০ কোটি টাকা দিলে ভালো হয়, অবশ্যই বরাদ্দ বাড়ানো হবে। হিসাব কমিটির সভাপতি হিসেবে আমি নিজে সুপারিশ করে সেটা অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সবখানে পাঠাবো। সুতরাং কাজটা আপনারা ভালোভাবে করেন।’

চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে একনেকে পাশ হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়। ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে খালের আবর্জনা অপসারণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রকল্পের কার্যক্রম।

সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লে. কর্নেল শাহ আলী এসময় প্রকল্পের কাজের বিস্তারিত সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদকে জানান। তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় ৬৪টি ব্রিজ-কালভার্ট করা হচ্ছে। মোট ৪০৮ কিলোমিটার ড্রেন এবং ৩০২ কিলোমিটার ড্রেনের শাখা নির্মাণ করা হচ্ছে। ৩৬টি খালের ওপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি সেগুলো খনন করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের কাজে ধীরগতির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ইউটিলিটি সার্ভিসের যেসব যন্ত্রপাতি আছে সেগুলো সরানো একটা কঠিন কাজ। ড্রেন করতে গিয়ে এগুলো আমাদের কাছে বড় সমস্যা। উচ্ছেদ চলছে। যতটুকু সম্ভব আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। সেনাবাহিনী কাজটা করায় সুবিধা হয়েছে যে, কেউ বাধা বা তদবির নিয়ে আসছে না। কিন্তু খালের অবৈধ স্থাপনাগুলো, শক্ত ভিত্তির কারণে যেমন শফি মোটরসকে জরিমানা করা হয়েছে, তারা পুরোপুরি পাকা স্ট্রাকচার তৈরি করে ফেলেছিল। রুবি সিমেন্ট খালের জায়গা দখল করে ঢালাই করে ফেলে। এদের কারণে পানি আটকে জলাবদ্ধতা হত। আমরা সেগুলো উচ্ছেদ করেছি। এই কাজটা কিন্তু সিটি করপোরেশনও এতদিন করতে পারেনি।’

লে. কর্নেল শাহ আলী জানান, অবৈধ দখলের কারণে খাল ও ড্রেনে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় ৩০টি স্পট তারা চিহ্নিত করেছেন। গত বর্ষায় এসব স্পটের জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণে কাজ করার জন্য ৪টি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছিল।

এসময় আব্দুস শহীদ সিটি করপোরেশন ও সিডিএ’র কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘খাল-নালা দখল করে যখন অবৈধ স্থাপনা হচ্ছে, তখন কাউন্সিলররা বাধা দিলেন না কেন ? এই যে ফাউন্ডেশনটা করল, এটা তো আর গোপনে হয়নি। সিটি করপোরেশন এবং সিডিএ যদি তাদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করত, তাহলে তো এটা হতে পারত না।’

খালের জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণকারীদের সমালোচলা করে তিনি বলেন, ‘যারা খালের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে পুরো শহরের জনসাধারণকে ভোগান্তিতে ফেলেছে এবং সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। মিডিয়া দখলদারদের বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারে।’

এসময় সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মেজর রেজোয়ানুল আলম এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতার প্রকল্প পরিচালক আহমদ মাইনুদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম জলাবদ্ধতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর