`সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সত্যতা নেই’
২৩ নভেম্বর ২০১৯ ২৩:০২
ঢাকা: সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সত্যতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের যদি বিন্দুমাত্র সত্যতা থাকতো তাহলে তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের অভিনন্দন জানাত।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ভ্যাকেনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ক্লাস-পরীক্ষা চালুর দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বর্তমানে সরকারের প্রধান দাবি- তারা নাকি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। এর ফাঁক-ফোঁকর, ভেতরের কথা আমরা জানি। তাদের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের যদি বিন্দুমাত্র সত্যতাও থাকতো তাহলে তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের অভিনন্দন জানাত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিত। কিন্তু আমরা আশ্চর্য হয়েছি, সুস্পষ্ট প্রমাণ হাজির করার পরও আন্দোলনকারীদের হয়রানি করা হচ্ছে।’
সরকার আন্দোলনকারীদের ফোনালাপে আড়ি পাতছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘চক্রান্ত আবিষ্কার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কানে ফোন পেতে রেখেছে। যে দাবিতে আন্দোলন চলছে তা প্রকাশ্য। এটা কোনো ফোনে পাওয়া যাবে না। যাদের ফোনে গোপন কথা পাওয়া যাবে, তারাই এই হয়রানির পেছনে আছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়কে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেওয়ার দায় উপাচার্য ও সরকারের মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যে সব দাবি উঠেছিল উপাচার্য তা মেনে নেয়নি। বরং শিক্ষার্থীদের থাকার হল বন্ধ করে দিয়েছেন; ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে সরকার এই আন্দোলনে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ ওঠার সাথে সাথে তাদের দায়িত্ব ছিল কমিটি গঠন করে তদন্ত করা। এ রকম দাবি যাতে না ওঠে সেই ব্যবস্থা করা। কিন্তু যেই অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারিকে পদত্যাগ করতে হলো, সেই অভিযোগে কোনো তদন্ত করা হলো না।’
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘উপাচার্য ফারজানা ইসলাম ক্ষমতাসীনদের ভাবমুর্তিতে পরিণত হয়েছেন। তিনি পদত্যাগ করলে সরকার আন্দোলনকারীদের কাছে ছোট হয়ে যাবেন। তাই গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়া পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করবেন না।’
ডাকসু ভিপি নুরুল হক বলেন, ‘সরকারকে অবিলম্বে এই দাবি মেনে নিতে হবে। তা না হলে এই দাবি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন এখন প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।’
সমাবেশে সংহতি জানান কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, ‘ছাত্র ইউনিয়ন’, ‘ছাত্রফ্রন্ট’, ‘ছাত্র ফেডারেশন’, ‘বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী’, ‘স্বতন্ত্র জোট’সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।