Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২০৪১ সালে মাথাপিছু আয় হবে সাড়ে ১২ হাজার ডলার


২৪ নভেম্বর ২০১৯ ২৩:৪০

ঢাকা: বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর পথরেখার পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় নিয়ে ২০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করেছে সরকারের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। এতে বলা হয়েছে, পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন হলে ২০৪১ সালে মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে সাড়ে ১২ হাজার ডলার। তখন দেশ তখন উন্নত, আর আয় হবে ডিজিটাল বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

পরিকল্পনার খসড়াটি রোববার (২৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি সন্তুষ্ট হয়ে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

২০ বছর মেয়াদি এ পরিকল্পনাটি ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার। শিগগিরই এটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন- উন্নত হবে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা উপস্থাপন

পরিকল্পনার খসড়ায় বলা হয়েছে, ২০২০ সালে দেশে চরম দারিদ্র্যের হার থাকবে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা ২০৩১ সালের মধ্যে শূন্যে নেমে আসবে। এছাড়া একই সময়ে দেশের মাঝারি দারিদ্রের হার থাকবে ১৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০৩১ সালে নাগাদ এই হার নেমে আসবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশে এবং ২০৪১ সালে ৫ শতাংশের নিচে।

২০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনাটি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম (সিনিয়র সচিব)। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা মেয়াদে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা হবে। কেননা প্রবৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা। বর্তমানে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এছাড়া নিম্ন মূল্যস্ফীতি, বাজেট ঘাটতি, লেনদেনের ভারসাম্য এবং অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের দায় রয়েছে। এ অবস্থা বজায় রাখা হবে। তবেই মানুষ দারিদ্র্যতা থেকে বেরিয়ে আসবে।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ‘২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া ২০৩১ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৯ শতাংশ এবং ২০২০ সালে পরিকল্পনা শুরুর আগের বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। কর্মসংস্থানের সমস্যা সমাধানে কৌশল নির্ধারণ, টেকসই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, উদ্ভাবনী অর্থনীতি বির্নিমাণ, অব্যাহত প্রবৃদ্ধির জন্য পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো তৈরি, নগরায়ন ব্যবস্থাপনা, মানব উন্নয়নে জনমিতিক লভ্যাংশের সদ্ব্যাবহার এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে পরিকল্পনা কৌশল নেওয়া হচ্ছে।

মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, পরিকল্পনার সময় মূল্যস্ফীতির হার ৪ থেকে ৫ শতাংশ কমিয়ে রাখা হবে। এছাড়া রফতানি বহুমুখীকরণের জন্য বাণিজ্য কাঠামো এবং বাণিজ্য নীতি ও প্রণোদনা ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে।

পরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে, বিরাজমান বাণিজ্য ব্যবস্থায় রফতানি বিরোধী প্রবণতার ফলে বহুমুখীকরণের সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটেছে। তৈরি পোশাক খাতের সাফল্য সামনে রেখে এমন একটি রফতানি নীতি করতে হবে যাতে এ খাতের বাইরে রফতানিকারকদের তৈরি পোশাকের মতই সুবিধা দেওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে থাকবে শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধা।

ড. শামসুল আলম বলেন, ‘পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের রফতানি উৎসাহিত করতে হবে। বহুমুখী কৃষি রফতানি বাড়াতে হর্টেক্স ফাউন্ডেশনকে শক্তিশালী করা হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কর জিডিপির নিম্ন অনুপাত পরিকল্পনায় অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরা হয়েছে। এটি জিডিপির ৯ শতাংশ মাত্র। যেটি বিশ্বে সর্বনিম্ন কর সংগ্রহের দৃষ্টান্ত। পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ’৪১-এর সবচেয়ে বড় আর্থিক চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কর জিডিপির অনুপাত ১৭ শতাংশে উন্নীত করা।

পরিকল্পনার খসড়ায় ২০৪১ সালের লক্ষ্য পুরণে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ায় সতর্ক কৌশল অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। প্রবৃদ্ধির জন্য সঞ্চয়-বিনিয়োগ সংযোগ ২০৪১ সালের মধ্যে জিডিপির গড় ৩৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হয়েছে। এছাড়া পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টেকসই কৃষিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে চুতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং প্রতিযোগিতামূলক ডিজিটাল বিশ্বে বাণিজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে হবে বলেও পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

২০৪১ সাল জিডিপি পরিকল্পনার খসড়া পরিপ্রেক্ষিত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর