৭ লাখ টাকার শস্যদানা ঘোষণা দিয়ে কোটি টাকার পানীয় আমদানি
২৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৬:২২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চীন থেকে দুই ধরনের শস্যদানা আমদানির ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পানীয় ও চকোলেট নিয়ে এসেছে ঢাকার গুলশানের একটি প্রতিষ্ঠান। কোটি টাকার ঘোষণাবর্হিভূত পণ্য আমদানির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
প্রায় এক বছর আগে ২২ মেট্রিকটন পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা কনটেইনারটি বুধবার (২৭ নভেম্বর) খুলে এর কায়িক পরীক্ষা করেন কাস্টমসের এআরআই শাখার কর্মকর্তারা। পরীক্ষায় ঘোষণা বর্হিভূত পণ্য আনার বিষয়টি ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার নুরউদ্দিন মিলন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকার গুলশানের উত্তর বাড্ডা এলাকার স্টার অ্যালায়েন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৩ মেট্রিকটন সুইটকর্ণ (মিষ্টি ভুট্টার দানা) এবং ৯ মেট্রিকটন কিডনি বিন (মটরশুটি দানা) আমদানির ঘোষণা দিয়ে ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলেছিল। চীনের আনাস পি ট্রেডিং পিটিই লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এই পণ্য আমদানির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
সিঙ্গাপুর থেকে আসা এমভি নাভা শিবা নামে একটি জাহাজে করে স্টার অ্যালায়েন্সের আমদানি কনটেইনার নিয়ে একটি জাহাজ ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করে। ২৫ দিন পর ১৭ জানুয়ারি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান সেই পণ্য খালাসের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। চট্টগ্রাম নগরীর শেখ মুজিব রোডের এলিট এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান পণ্য খালাসের দায়িত্ব পায়।
কাস্টমস কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মিলন সারাবাংলাকে বলেন, ‘কনটেইনারটির ওপর গোয়েন্দা নজরদারি ছিল। সে জন্য সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান গত ১০ মাস ধরে সেটি খালাস না করে বন্দরের ইয়ার্ডে রেখে দেয়। কিন্তু আমরা নিজস্ব ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা কনটেইনারটির কায়িক পরীক্ষার উদ্যোগ নিই।’
তিনি জানান, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ঘোষণা অনুযায়ী কোনো কিডনি বিন কনটেইনারে পাওয়া যায়নি। আর ১৩ টন আমদানির ঘোষণা দিলেও সুইট কর্ণ পাওয়া গেছে মাত্র ৫ কেজি। কনটেইনারে বিভিন্ন ধরনের সফট ও হার্ড ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস, চকোলেট ও ওয়েফার মিলিয়ে ২২ টন পণ্য পাওয়া গেছে। এসব পণ্যের মধ্যে শুধুমাত্র ২টি আইটেম বাদে সবই মেয়াদোত্তীর্ণ।
নুরউদ্দিন মিলন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৭ লাখ টাকার পণ্য আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল। অথচ এনেছে প্রায় এক কোটি টাকার পণ্য। এর মাধ্যমে তারা প্রায় ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’