Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বিএনপি’র কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া পিছিয়েছে’


২৮ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:৩১

ঢাকা: বিএনপি’র কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অনেক সময় লেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এখন সব অফিসেই কম্পিউটার ব্যবহার হয়। আর এজন্য তিনি তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভূমিকা তুলে ধরেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসবভবন গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চারটি উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা শেষে এসব কথা বলেন। এগুলো হল, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে কাপ্তাই থেকে নির্মিত ভ্রাম্যমান গবেষণা তরী, বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি, কালিয়াকৈর, গাজীপুরে নির্মিত ‘ফোর টায়ার জাতীয় ডাটা সেন্টার’, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে প্রদত্ত সৌর বিদ্যুৎ সুবিধাদি এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের নতুন ৫টি জাহাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। পরে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তিনি সেসব এলাকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সজীব ওয়াজেদ জয় সবসময় আমাদের সহযোগিতা করেন। তার পরামর্শ নিয়েই আমরা এই কাজগুলো করে থাকি। কারণ এ ব্যাপারে সে সেই স্কুল জীবন থেকেই পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে, সে যখন স্কুলে তখন থেকেই আমরা তার কাছ থেকে শিখছি।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে গিয়ে বিএনপি আমলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে কম্পিউটার কিনবো বলে, নেদারল্যান্ড সরকারের সাথে চুক্তি হয়ে গেল। টাকা পয়সা দিয়ে দেওয়া হল। কিন্তু দুভার্গ্য যে আমাদের ৫ বছর সময়ও শেষ হয়ে গেল। ২০০১ সালে আমাদের সময় শেষ। আমরা ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে গেলাম।’

বিজ্ঞাপন

‘নেদাল্যান্ডের জাতীয় ফুল টিউলিপ। খালেদা জিয়াকে বোঝানো হল যে, ওদের যে কোম্পানির কাছে কিনবো সেই কোম্পানির নাম টিউলিপ। এই টিউলিপ নাম নিয়ে হল বিভ্রান্তি। কারণ খালেদা জিয়াকে বোঝানো হল শেখ রেহানার মেয়ের নাম যেহেতু টিউলিপ। নেদার‌্যলান্ডের ওই কোম্পানি, ওটার নামও টিউলিপ। তাই ওদের কাছ থেকে কম্পিউটার নেওয়া যাবে না। সে কারণে সেটা বন্ধ করে দিল, টিউলিপ কোম্পানি বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করল, সেই মামলায় বাংলাদেশ হারল। আবার দশ হাজার কম্পিউটার তো গেলই, আরও ৩২ কোটি টাকা ডেমারেজ দিতে হল।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে আজ সত্যি আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আমি খুশি যে, আমাদের সকল অফিসে কম্পিউটার ব্যবহার হয়। একসময় আমাকে এটা চাপ দিতে হয়েছিল, আমার কাছে নোট শীট কম্পিউটারি ট্যাগ করা না হলে আমি সই করবো না। এখন আর সেটা করা হয় না। এখন সবাই ব্যবহার করতে পারে। হাতে হাতে ঘরে ঘরে ল্যাপটপ-কম্পিউটার গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আমরা কম্পিউটার দিয়ে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি সেখানে বহু ছেলেমেয়ে গ্রামে বসে কাজ করতে পারছে।

ডাটা সংগ্রহের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে যেকোনো ডাটা আমাদের সংরক্ষণ থাকবে। এখন আমাদের বিদেশি কারও কাছে নির্ভরশীল হতে হবে না। আমাদের অর্থ যেমন সাশ্রয় হবে, আবার এখান থেকে অর্থ উপার্জনেরও একটা সুবিধা আমরা করতে পারব। কাজেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার এটা আরেকটা ধাপে উন্নীত হলাম।

প্রধানমন্ত্রী সজীব ওয়াজেদ জয়ের কম্পিউটার সায়েন্স শেখার বিষয়ে জানান, জয় সবসময় আমাদেরকে সহযোগিতা করেন। কারণ সে ব্যাঙ্গালোর ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে গ্রাজুয়েশন করেছে, এরপরে ঢাকায় এসে কিছুদিন চাকরি করে। চাকরি করার পর তার মাথায় এটা ঢোকে, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং শিখতে হবে, নইলে শেখা হবে না কিছু। তারপর সে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর আবার গ্রাজুয়েশন করে। তার অনেক বছর পরে হাভার্ড থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী করে। কাজেই তার পরামর্শ নিয়েই আমরা এই কাজগুলো করে থাকি।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী তার অনুভূতি সম্পর্কে বলেন, আজকে সত্যিই আমি খুব আনন্দিত। আমাদের এই ডাটা সেন্টারটি তৈরি হয়ে গেছে। কাজেই এটা আমাদের দেশের জন্য যথেষ্ট সুযোগ করে দেবে। আর এখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। আমরা বাংলাদেশের একটা লক্ষ্য স্থির করেছি, এর মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। সেই লক্ষ্য অর্জনেও আমাদের সহায়তা থাকবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গণভবন প্রান্তে ভিডিও কনফারেন্সিং অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।

ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর