Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আইএসের টুপি কারাগার থেকে আসেনি: তদন্ত কমিটি


৩০ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:৩৫

ঢাকা:

হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মামলার রায় ঘোষণার পর দুই আসামি ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর লোগো সম্বলিত যে টুপি পরে আদালত থেকে বের হন সে বিষয়ে কারা কর্মকর্তাদের কোনো গাফিলতি নেই বলে জানিয়েছে এ ঘটনায় গঠিত কারা তদন্ত কমিটি।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে ডেপুটি আইজি প্রিজন টিপু সুলতান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

টিপু সুলতান বলেন, তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, আসামিদের কাছে টুপি পৌঁছানোর বিষয়ে কারা কর্মকর্তাদের কোনো গাফিলতি নেই। এই টুপি আসামিরা কারাগার থেকেও সংগ্রহ করেননি বলে নিশ্চিত করেছে কমিটি।

তবে গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছিল, হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যান কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকেই আইএসের লোগো সম্বলিত টুপিটি নিয়ে এসেছিল।

পুলিশের তদন্ত কমিটির প্রধান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুবুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘রিগ্যান আইএসের টুপিটি কারাগার থেকে পকেটে করে নিয়ে এসেছিল। প্রাথমিক তদন্তে আমরা এ তথ্য পেয়েছি।’

জঙ্গি রিগ্যান নিজেও বুধবার (২৭ নভেম্বর) এজলাস থেকে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় জানিয়েছিল, কারাগার থেকেই সে আইএস টুপিটি নিয়ে এসেছিল। তবে সেদিন তার সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব আলম।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কারাগার থেকে আসামিদের আদালতে পাঠানোর আগে সঠিকভাবে তল্লাশি করা হয়েছে। এতে কোনো গাফিলতি বা ফাঁক-ফোঁকর ছিল না। আমাদের ভিডিও ফুটেজ দেখলেও তল্লাশির বিষয়টি প্রমাণ পাওয়া যাবে। যে টুপি নিয়ে কথা উঠছে, সেটির বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। ওখানে যে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন, তারা হয়তো বলতে পারবেন।’

বুধবার দুপুর ১২টার পর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান হলি আর্টিজান হামলা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে যে সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়ছে, তাদের একজন রিগ্যান।

বুধবার সকালে মামলাটির আরও সাত আসামির সঙ্গে রিগ্যানকেও কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে। সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে যখন তাদের প্রিজন ভ্যান থেকে নামানো হয়, তখন রিগ্যানের মাথায় কোনো টুপি ছিল না। প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তাদের রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়।

দুপুর ১২টার দিকে রায় ঘোষণার আগে হাজতখানা থেকে যখন আসামিদের এজলাসে নেওয়া হয়, ঠিক তখন রিগ্যানের মাথায় দেখা যায় কালো একটি টুপি। সেই টুপিতে কোনো ধরনের চিহ্ন বা প্রতীক দেখা যায়নি। তবে রায়ের পর এজলাস থেকে যখন বের করা হয় আসামিদের, তখন রিগ্যানের মাথায় অন্য একটি টুপি দেখা যায়। ওই টুপিতে যে প্রতীক খচিত ছিল, সেটি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) তাদের লোগো হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। আদালতে উপস্থিত অনেকেই জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার পর পরই তার মাথায় এই টুপি দেখা যায়।

কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে নিয়ে আসা এবং আদালতের হাজতখানাসহ এজলাস পর্যন্ত যে কঠোর নিরাপত্তা ছিল, তার মধ্যেই রিগ্যানের পকেটে সেই আইএস টুপি কিভাবে এলো, তা নিয়ে তোলপাড় ওঠে সারাদেশে। কারা কর্তৃপক্ষ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো সদুত্তরও মেলেনি এ বিষয়ে। তবে টুপির রহস্য ভেদ করতে নড়েচড়ে বসে কারা কর্তৃপক্ষসহ পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী।

আইএস টুপির রহস্য ভেদ করতে বুধবারই তদন্ত কমিটি গঠন করে কারা কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ।

আইএসের টুপি টপ নিউজ হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলা মামলার রায়


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর