বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে অনুসন্ধান কমিশন গঠন কেন নয়: হাইকোর্ট
১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:৪৯
ঢাকা: মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক সম্পুরক আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (১ ডিসেম্বর) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
রুলে ‘ভাড়া নিয়ন্ত্রক’ নিয়োগসহ বাড়িভাড়ায় বিদ্যমান অসঙ্গতি দূর করে মানসম্মত বাড়ি ভাড়া নির্ধারণে সুপারিশ প্রণয়নে অনুসন্ধান আইন, ১৯৫৬ এর ৩(১) ধারা অনুযায়ী অনুসন্ধান কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব, আইন সচিব ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রক, বাড়ী-মালিক বা ভাড়াটিয়ার আবেদনের ভিত্তিতে, কোন বাড়ীর মানসম্মত ভাড়া করিবেন এবং এমনভাবে তা ঠিক করিবেন যেন এর বাৎসরিক পরিমাণ বিধি দ্বারা ঠিক করা পদ্ধতিতে স্থিরকৃত উক্ত বাড়ীর বাজার মূল্যের ১৫% শতাংশের সমান হয় :
তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে মানসম্মত ভাড়ার পরিমাণ Premises Rent Control Ordinance, 1986 (XXII of 1986) এর অধীন ঠিক করা হয়েছে সেক্ষেত্রেেএকইভাবে নির্ধারিত মানসম্মত ভাড়া, নিয়ন্ত্রক কর্তৃক সংশোধন বা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত, এই ধারার অধীন নির্ধারিত মানসম্মত ভাড়া হিসাবে গণ্য হবে ৷
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সম্পূরক আবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের ১৭ মে হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেছিলেন।
দীর্ঘ শুনানির পর ২০১৫ সালের ১ জুলাই পর্যবেক্ষণসহ জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয়। কিন্তু রায় প্রকাশের আগেই ওই বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বজলুর রহমানের অকাল মৃত্যু হলে বাদিপক্ষ রায়ের অনুলিপি পাননি।
পরবর্তীতে এই রিট মামলাটি বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে হাইকোর্টের এই বেঞ্চে আসে।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া আইনে ভাড়া ঠিক করার যে পদ্ধতি বলা আছে, সেই পদ্ধতি অনুসারে এখন যে বাসার ভাড়া ৩০ হাজার টাকা সে বাসার ভাড়া হবে ৯০ হাজার টাকা। এটাই হলো দেশের প্রচলিত আইন। এই কারণে ভাড়া ঠিক করার জন্য মালিক এবং ভাড়াটিয়ার মধ্যে যে বিধান ছিল সে ব্যপারে কেউ আদালতে যাচ্ছে না। কারণ এটা অসম্ভব এবং অকার্যকর। এই পরিপ্রেক্ষিতেই এইচআরপিবি’র পক্ষ থেকে আইনটিকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি। আদালত শুনেছেন।
তিনি আরও বলেন, মানসম্মত বাড়ি ভাড়া ঠিক করার কথা। কিন্তু সরকার সেটি করেনি। যার ফলে ভাড়াটিয়া এবং বাড়িওয়ালাদের মধ্যে প্রায়ই বিরোধ হচ্ছে। অনেক বাড়িওয়ালাই ইচ্ছেমত ভাড়া বাড়াচ্ছেন, অনেক ভাড়াটিয়কে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছেন। যা নিয়ে নানা জটিলতা হচ্ছে। কিন্তু কোনো ভাড়াটিয়া যে আদালতে গিয়ে প্রতিকার পাবে, আইনি জটিলতা এতটাই বড় যে সে কারণে সেটা তারা পারছে না। এই কারণে আমরা একটি আবেদন করেছিলাম কমিশন গঠনের জন্য।সেই আবেদন শুনে আদালত রুল জারি করেছেন বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।