দু’বছর পর চুয়াডাঙ্গায় চালু হলো কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কার্যক্রম
৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:৪৮
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নে ২ বছর পর চালু হয়েছে কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কার্যক্রম। দামুড়হুদা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় কৃষিপণ্য সংগ্রহ বিপণন কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন কৃষকদের উৎপাদিত সবজি পাঠানো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা।
কেন্দ্রটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও বাজার সুবিধাপ্রদানকারী বদরুল আলম। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে দামুড়হুদা উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য সংগ্রহ ও বিপণনের সুবিধার্থে জয়রামপুর ও পারকৃষ্ণপুর-মদনা গ্রামে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কৃষি অধিদফতরের দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্প কর্তৃক দু’টি কৃষি পণ্য সংগ্রহ বিপণন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।
ওই সময় এলাকার কৃষকরা সমিতির মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্য বেগুন, লাউ, চিচিংগা, পেঁপে, কাঁচাকলা, কুমড়ো, শিম, পেয়ারা, কুল, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতেন। তবে দুই বছর চলার পর দু’টি কেন্দ্রই বন্ধ হয়ে যায়। পরে দুই বছর বন্ধ থাকার পর জয়রামপুর গ্রামের কেন্দ্রটি এ বছর চালু হয়। এখন প্রতিদিন জয়রামপুর বিপণন কেন্দ্র থেকে ৬-৭টি ট্রাকে কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে পারকৃষ্ণপুর-মদনা এলাকার কেন্দ্রটি।
দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের সবজি চাষি আব্দুল হান্নান, আক্কাছ আলি ও শাহনেওয়াজ বলেন, ‘কেন্দ্রটি চালু হওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। পণ্য এখানে নিয়ে এলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছে। এছাড়াও এসব পণ্য নিজেরাই সমিতির মাধ্যমে ট্রাকবোঝাই করে নিয়ে গিয়ে সরাসরি ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রামের নিজেদের পছন্দের আড়তে পাঠাতে পারছি। সেখানে বেচাকেনার শেষে ঘরে বসে বিক্রি হওয়া কৃষি পণ্যের টাকা মোবাইল ব্যাংকিং অথবা ব্যাংকের মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছি। এতে আমাদের সময় কম ব্যয় হচ্ছে, তেমনি ঘরে বসে সঠিক দাম পাচ্ছি।’
এই কেন্দ্রের উদ্যোক্তা শাহানেওয়াজ ও আব্দুল হালিম বলেন, ‘এলাকার চাষীরা আমাদের মাধ্যমে তাদের কৃষিপণ্য এনে এখান থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছে। আমরা চাষিদের দেশের বিভিন্ন আড়ৎদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছি। তারা স্থানীয় বাজার ছাড়াও বাইরে বেশি দামে কৃষি পণ্য বিক্রি করতে পেরে ভালো লাভবান হচ্ছে।’
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনার কেন্দ্রটি এলাকায় সবজির চাষ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বর্তমান প্রকল্পটির নাম পরিবর্তন করে ‘নিরাপদ উদ্যানতাত্ত্বিক ফসল উৎপাদন ও সংগ্রহত্তোর প্রযুক্তি সম্প্রসারণ’ রাখা হয়েচে। জয়রামপুর গ্রামে এটি খুব ভালোভাবে চলছে। এলাকার কৃষকরা উৎপাদিত সবজি ও ফল ঘরে বসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছে। ঘরে বসে মোবাইল ব্যাংকিং অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তাদের টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। তবে ঢাকা, চট্টগ্রামে কৃষিপণ্য পাঠাতে ফেরি পারাপারে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ফেরি পারাপারের সময় নিশ্চিত হলে চাষিরা আরো বেশি লাভবান হতো।