‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকার অপরাধ আইন দ্রুত কার্যকর হোক’
৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:১০
ঢাকা: একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকার অপরাধ আইন দ্রুত কার্যকর হোক। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র চিকিৎসা সহায়ক কমিটি-এর আয়োজনে ‘বাঙালির অহংকার: বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামে এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যারা অস্বীকার করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনা দরকার। সেজন্য প্রয়োজন কঠোর আইন প্রণয়ন করা। এ বিষয়ে আমরা আইন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী আইন কমিশন ইতোমধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকার অপরাধ আইন তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে এবং সেখানে বলেছে যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করবে তাদের জন্য আজীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে। সরকারকে আমরা অনুরোধ জানাবো দ্রুত এই আইন কার্যকর করার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা যখনই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা করবো, তখনই আমরা তার আদর্শ নিয়েও কথা বলবো। যে আদর্শের কারণে পাকিস্তানপন্থীরা তাকে হত্যা করেছে। তারা ক্ষমতার জন্য নয় বরং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পরে জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করেছিলেন যে বিচার কাজ বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু অতি দ্রুত সময়ে বাংলাদেশকে যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, জিয়াউর রহমান সেই সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই মুছে ফেলেছিলেন। যে কারণে ৭৫ এর পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা ও বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করা হয়। এমনকি স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়েও তারা বিতর্ক সৃষ্টি করে। অথচ এটির কোনো বৈধতাই নেই।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাঙ্গালীর মুক্তিযুদ্ধ, এটি হলো বাঙালির অহঙ্কার। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ও বঙ্গবন্ধু এ দুটো হলো সমার্থক শব্দ। বাঙালি জাতির পাঁচ হাজারের বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন যে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ হতো না। স্বাধীন সার্বভৌম, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়া ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, যার প্রতিফলন পাওয়া যায় ১৯৭২ সালের সংবিধানে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সভাপতি ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা.উত্তম কুমার বড়ুয়া। এতে মূল প্রবন্ধ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র চিকিৎসা সহায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব ( স্বপ্নীল)।
ডা.মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা.মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল রশীদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়া ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা.নুজহাত চৌধুরী। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন