সুদ এক অংকে না নামালে ব্যবসা করা যাবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী
৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:৫৩
ঢাকা: সুদ হার এক অংকে নামিয়ে না আনলে ব্যবসা করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ‘সুদহার এক অংকে নামিয়ে না আনলে কোনো ব্যবসা করা যাবে না। অন্তত জেনুইন ব্যবসা করা যাবে না। অন্য কিছু করা গেলে যাবে।’
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী সিরামিক এক্সপো-২০১৯’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। এতে বাংলাদেশসহ ২০ দেশের ১৫০টি ব্র্যান্ড অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১২ থেকে ১৪ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারে না। এত সুদ হলে একটার পর একটা ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে। ঋণ খেলাপির সংখ্যা বাড়বে। এ বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী ব্যাংক ঋণে সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিলেন। এ জন্য ব্যাংকারদের নানা সুবিধা দেওয়া হলো। ব্যাংকাররা সুবিধাটা পুরোপুরি নিলো কিন্তু এক বছর পার হয়ে গেলেও সুদহার এক অংকে আনলো না।’
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীও অনেকবার তাগাদা দিয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো প্রাইভেট ব্যাংক সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে আনেনি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশই পৃথিবীর ব্যতিক্রমই দেশ, যেখানে স্প্রেড অনেক হাই। অন্যান্য দেশে যেখানে স্প্রেড আড়াই থেকে তিন। আমাদের দেশে এটা ৬ শতাংশরও ওপরে। যেটা হওয়া উচিত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী ব্যাংকারদের নিয়ে বসেছিলেন। সম্ভবত জানুয়ারি থেকে সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেখি কি হয় আমাদের ভরসা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব সংগ্রহের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সমালোচনা করে টিপু মুনশি বলেন, ‘এনবিআর যে পদ্ধতিতে রাজস্ব সংগ্রহ করে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনেকরি এ পদ্ধতিটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অনেক জনগণ আছে আয়কর দেওয়ার যোগ্য। কিন্তু কয়জন দেয়? এই পরিধিটা যদি বড় না করে যারা দেয় তাদের ওপরই যদি চাপ সৃষ্টি করা হয়, তাহলে যারা দেয় তাদের তো নাভিশ্বাস ওঠে যাবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার এবং অতিরিক্ত ট্যাক্সের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আশা করি সরকার এ বিষয়গুলোই নজর দেবে।’
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘গত দশ বছরে সিরামিক খাতে উৎপাদন বেড়েছে ২০০ শতাংশ । বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। ৫০টিরও বেশি দেশে বছরে রফতানি আয় প্রায় পাঁচ কোটি ডলার।’