রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাতটির মতো সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে: টিআইবি
৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:০৭
ঢাকা: ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে (টেকনাফ ও উখিয়া) সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতা লক্ষণীয়। ক্যাম্পগুলোতে প্রায় সাতটির মতো সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মুক্তিপণ না পেলে হত্যা করে লাশ গুম করা, ইয়াবা ও মানবপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) উদ্যোগে ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের (রোহিঙ্গা) নাগরিকদের বাংলাদেশে অবস্থান: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’, শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। টিআইবি‘র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এই কাজের গবেষণা উপদেষ্টা ছিলেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আগস্ট ২০১৯ পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে ৫৯ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আটক করার সংখ্যা ছিল ৬৯০ জন। পুলিশ, পাসপোর্ট অফিস ও নির্বাচন কমিশনের কিছু অসাধু কর্মচারী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজশে রোহিঙ্গাদের একাংশ জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরিসহ মোবাইল সিম কার্ড সংগ্রহ করছে।
চীন-ভারত-জাপান রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পক্ষে: টিআইবি
এছাড়া সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির ঘাটতির কারণে ক্যাম্পগুলোতে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গার হাতে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের পাশাপাশি অনলাইনভিত্তিক ১০টি ইউটিউব চ্যানেলে রোহিঙ্গারা সক্রিয় রয়েছে। এর ফলে জাতীয় স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়াসহ নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, জমি দখল এবং বিভিন্ন কোন্দলের কারণে রোহিঙ্গাদের একাংশ স্থানীয় অধিবাসী, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হামলার শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
২০১৯ সালের ২২ আগস্ট একজন রাজনৈতিক কর্মীকে নেতাকে হত্যা করা হয়। অভিযোগ রয়েছে একদল রোহিঙ্গা ওই ব্যক্তিকে তার বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং পাশের একটি পাহাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনার পর ২৪ আগস্ট বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা একটি রোহিঙ্গা শিবিরে হামলা চালিয়ে অস্থায়ী ঘরবাড়ি ও এনজিও অফিসগুলোতে ভাঙচুর করে এবং টেকনাফ পৌরসভা থেকে লেদা পয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরোধ করে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) রোহিঙ্গা সংকটকে ঘিরে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করে।
কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প টিআইবি টিআইবির প্রতিবেদন