‘যানজট নিরসনে ঢাকার ভেতর আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ করতে হবে’
১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:৩১
ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং যানজট নিরসনে কোনো অবস্থাতেই ঢাকার ভেতর দিয়ে আন্তঃজেলা বাস চলাচল করতে পারবে না। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যেমে পদক্ষেপ নেব।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি। টার্মিনাল এলাকার সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ১৯৮৪ সালে যখন ঢাকার ভিতরে বাস টার্মিনাল করা ছিল আমাদের চরম ভুল। এ ভুলের কারণে ক্রমেই বাড়ছে যানজট। যান ভুক্তভোগী আমরা। তাই রাজধানীর ভেতরে সিটি বাস ছাড়া বাইরের আন্তঃজেলা বাস চলতে পারবে না- এমন সিদ্ধান্ত আমাদের অবশ্যই নিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব এগুলো সরিয়ে নিতে হবে।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ টার্মিনালের আরেকটা বড় সমস্যা হলো মূল সড়কেও বাস রাখা হয়। এতে করে আরও যানজট তৈরি হয়। আমি বাস মালিকদের বলব, আপনারা এমনটা করবেন না। মহাখালীতে আর দূরপাল্লার বাস দেখতে চাই না। আসুন সবাই মিলে একটি পরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণে সিটি করপোরেশনের সবধরনের সহায়তা করবে। সিটি করপোরেশন থেকে বাস টার্মিনাল নির্মাণে নতুন জায়গার সন্ধান করা হবে। আপনারাও খুঁজুন। কোথাও পেলে আমাদের জানাবেন। এছাড়া রাজধানীতে গণপরিবহনের নিজেদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা দূর করতে হবে।’
এ সময় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘বর্তমানে সড়কে কে কার আগে যাবে, কে যাত্রী বেশি পাবে এ নিয়ে প্রতিযোগিতা চলে। বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির কাজ অনুযায়ী সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ শেষ হলে এমন প্রতিযোগিতা আর থাকবে না। টিকিট কাউন্টার সিস্টেম চালু করলে কন্ট্রাক্ট সিস্টেম আর থাকবে না। ফলে এই অসম প্রতিযোগিতা আর হবে না। প্রতিযোগিতার কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজধানীতে সুশৃঙ্খল পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাস রুট রেশনালাইজেশনের বিষয়ে গঠিত কমিটির মাধ্যেমে ঢাকায় নির্দিষ্ট সংখ্যক কোম্পানির আওতায় ৫ হাজার বাস নামানো হবে। যার মধ্যে ১ হাজার এসি বাস। টিকিট কাউন্টার এবং স্মার্ট কার্ডের ব্যবহার থাকবে। ফলে রাজধানীতে সুশৃঙ্খল পরিবহন ব্যবস্থা চালু হবে।’
এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আগে চালক সংকট দূর করতে হবে। তবেই দুর্ঘটনার সংখ্যা কমে আসবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে চালক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্তমান সরকারই প্রথম চালক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি বিআরটিএ’র বর্তমানে পর্যাপ্ত লাইসেন্স দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তাদের যে পরিমাণ জনবল দরকার তার অর্ধেকও নেই। আগে প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।’
মহাখালী বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আবুল কালামের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী প্রমুখ।