‘ভাই বাঁচবে না, তাই বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি’
১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:২৭
ঢাকা: ‘আমরা যখন জানতে পেরেছি, আমার ভাই বাঁচবে না। তখন তাকে আর হাসপাতালে রাখব না। মরলে বাসায় গিয়ে মরবে। তাই ভাইকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বের) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে কথাগুলো বলছিলেন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) কেরাণীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানার অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ দুর্জয় দাসের বোন নয়ন তারা।
নয়ন তারা বলেন, ‘ওয়ার্ডের কয়েকজন লোক বলছে, তার ভাই বাঁচবে না। তার শরীরেরর ১০০ ভাগ পুড়ে গেছে। ডাক্তাররা কী চিকিৎসা দিল আমার ভাইকে?
দগ্ধ দুর্জয় দাসের বাড়ি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায়। সে প্লাস্টিক কারখানায় লেবারের কাজ করত। অগ্নিকাণ্ডের সময় দুর্জয় কারখানার ভিতরে ছিল।
দুর্জয়ের বাবা মিন্টু দাস বলেন, ‘আগুনের লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে দুর্জয়কে না পেয়ে ঢাকা মেডিক্যালে ছুটে আসি। এখানে এসে বার্ন ইউনিটে দগ্ধ অবস্থায় ছেলেকে দেখতে পাই। তার সারা শরীর পুড়ে গেছে। আমার ছেলেকে আমিই চিনতে পারছিলাম না। অনেকেই বলছে বাঁচবে না। তাই বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। ভগবান যা করে।’
এর আগে, বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আগুন লাগে কেরাণীগঞ্জের চুনকুঠিয়ায় প্রাইম প্যাক্ট নামের প্লাস্টিক কারখানায়। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট প্রায় সোয়া একঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কারখানাটিতে মূলত ওয়ান টাইম প্লেট, গ্লাস ও প্যাকেট তৈরি হতো।
এদিকে কেরাণীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ঘটনাস্থলেই মারা যান আরও একজন। সব মিলিয়ে ওই ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন আরও ২৪ জন। বৃহস্পতিবার এদের মধ্যে ১১ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ঢামেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দগ্ধদের বেশিরভাগেরই শরীরের পুরোটা পুড়ে গেছে। বিশেষ করে সবার শ্বাসনালী আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাদের অনেকের অবস্থা সংকটাপন্ন।
আরও পড়ুন:
অনার্সে ভর্তি হওয়া হলো না মেহেদীর, রয়ে গেল বেতনের জমানো টাকা
কেরাণীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন: ঢামেকে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০