Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করছে সরকার


১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৫:০৮

হাসান আজাদ,স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা :গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। মূলত আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস-এলএনজির দাম দেশে উৎপাদিত গ্যাসের দামের চাইতে বেশি হওয়ায় সমন্বয় করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান, জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।

এই কর্মকর্তা জানান, আমদানি করা এলএনজি ও দেশে উৎপাদিত গ্যাসের দাম সমন্বয় করা হবে। এর ফলে সব ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়বে। মূল্য সমন্বয়ে আগামী সোমবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সঙ্গে আলোচনায় বসবে এলএনজির মুল্য নির্ধারনের জন্য গঠিত কমিটি।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে বিইআরসির অপর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আগামি সোমবার এলএনজি ও দেশে উৎপাদিত গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে মূল্য সমন্বয়ের একটি খসড়া তৈরি করা হবে বলে  জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, আমদানিকৃত প্রতি ঘনমিটার এলএনজির দাম পড়বে ১৩ টাকা ৫২ পয়সা। অন্যদিকে দেশের উৎপাদিত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৭ টাকা ৩৫ পয়সা। দেশে উৎপাদিত গ্যাসের চাইতে এলএনজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় মূল্য সমন্বয় করার পর ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়বে এটা নিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে কোন প্রক্রিয়ায় বাড়ানো হবে এটা ঠিক করা হয়নি। তবে সরকার চাইছে ধাপে ধাপে মূল্য বাড়ার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে। যাতে করে ভোক্তারা চাপে না পড়ে।

এর আগে গত ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এলএনজি আমদানির প্রেক্ষিতে ভোক্তা পর্যায়ে মুল্যবৃদ্ধি ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহবায়ক করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন ইআরডি, শিল্প মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পেট্রোবাংলা, আরপিজিসিএল ও জ্বালানি বিভাগের একজন প্রতিনিধি।

বিজ্ঞাপন

সরকার ইতোমধ্যে বড় আকারে এলএনজি আমদানির দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর একটি করছে আমেরিকান কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। অন্যটি শীর্ষস্থানীয় দেশীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ। প্রতিষ্ঠান দুটি দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সমপরিমাণ এলএনজি এনে তা পুনরায় গ্যাসে রূপান্তরিত করে পাইপলাইনে সরবরাহ করবে। এর জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে তৈরি হচ্ছে ভাসমান টার্মিনাল বা এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট)।

এর মধ্যে এক্সিলারেট এনার্জির ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে আগামী বছরের এপ্রিলে। সে অনুযায়ীই সব কাজ করছে কোম্পানিটি। এর পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে, অর্থাৎ আগামী বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে সরবরাহ শুরু হবে সামিটের ৫০ কোটি ঘনফুট।

পেট্রোবাংলার হিসাব অনুযায়ী, আগামী বছর দেশে গ্যাসের দৈনিক সর্বোচ্চ চাহিদা হবে ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দেশের ক্ষেত্রগুলো থেকে কম-বেশি ২৭০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। আর ১০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি হিসেবে আমদানি হবে। ফলে দেশের সর্বোচ্চ চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য আসবে। এইভাবে সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০২৫ সালের মধ্যে দৈনিক ৪০০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি করা।

এর অংশ হিসেবে ভারতের রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেড ২০১৯ সালের জুনে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুটের সমপরিমাণ এবং হংকং সাংহাই-মানজালা নামের একটি যৌথ উদ্যোগের কোম্পানি ২০২০ সালের মধ্যে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুটের সমপরিমাণ এলএনজি সরবরাহ শুরু করবে। ভারতের পেট্রোনেট এলএনজি লিমিটেড দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট এবং চীনের দুটি কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে দৈনিক আরও ১০০ কোটি ঘনফুটের সমপরিমাণ এলএনজি আমদানির জন্য স্থলভিত্তিক অবকাঠামো তৈরির প্রস্তাবও সরকারের বিবেচনাধীন আছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এইচএ/জেডএফ

 

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কোস্ট গার্ডের নতুন ডিজি জিয়াউল হক
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩২

সম্পর্কিত খবর