Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নতুন প্রজাতির মৌমাছি উদ্ভাবনের আহ্বান


১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৫:৪৪

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশীয় প্রজাতির সঙ্গে বিদেশ থেকে আনা মৌমাছির ক্রস করে নতুন প্রজাতি উদ্ভাবনের পর ভালো কোনো ফলাফল আসে কি-না তা যাচাই করার জন্য বিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘দেশি প্রজাতির সঙ্গে বিদেশ থেকে আনা মৌমাছির ক্রস করে নতুন জাত উদ্ভাবন করা যেতে পারে। এবং এসব মৌমাছি ফসলে কী রকম পরাগায়ন ঘটাতে পারে, তুলনামূলক কী ফলাফল আসে— তা নিয়ে কাজ করা দরকার।’

রাজধানীর খামারবাড়ীর আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিল্কী অডিটরিয়ামের খোলা প্রাঙ্গণে রোববার সকালে দু’দিনব্যাপী চলমান জাতীয় মৌ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ফসলের মাঠে মৌ পালন, অর্থ পুষ্টি বাড়বে ফলন’ স্লোগানকে সামনে রেখে এই মেলার আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশি মৌমাছি নিয়েও গবেষণা হওয়া উচিত। এরা যুগ যুগ ধরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের আবহাওয়ায় টিকে আছে।’

তিনি বলেন, ‘সকল শ্রেণী-পেশা ও বয়সের মানুষই মধু খায়। মধু খেয়ে মানুষ নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করে। গ্রামে নতুন কোনো শিশুর জন্ম হলে আগে প্রথমেই মুখে মধু দেওয়া হতো। এখন ডাক্তাররা অনুৎসাহিত করেন। কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক তা আমরা বলতে পারছি না। তবে আমাদের দাদা-দাদুরা কিন্তু মুখে মধু নিয়েই জন্মেছিলেন।’

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন,  ‘কীটপতঙ্গ কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত নয়। তারপরও আমরা মৌ মেলার আয়োজন করেছি। মৌ-চাষের ওপর জোর দিচ্ছি, যেহেতু মৌমাছির মাধ্যমে দানাদার খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সম্প্রসারণ কর্মীদের উপর সব ধরনের দায়িত্ব চাপাবেন না।  কোন কোন স্তরে মানুষ মধু সংগ্রহে আগ্রহী হবে তা আপনারা খুঁজে বের করুন।’

বিজ্ঞাপন

পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাওয়ার কথা পুনরায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পানির স্তর নিচে নেমে নামছে। বোরো উৎপাদনে পানির খরচও বেশি হয়। বোরো কিন্তু আমাদের প্রাকৃতিক ফসল নয়। তাই প্রাকৃতি ফসল আউশ ও আমনের দিকে জোর দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দানাদার খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মাঝে-মধ্যে আমাদের দানাদার খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। আর এ তালিকায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে রয়েছে গম। সত্যিকার অর্থে গম আমাদের খাদ্য নয়। দেশে গমের উৎপাদনও ভালো হয় না। কারণ গম করার পরিবেশ আমাদের এখানে নেই, আবহও নেই।’

মেলা উপলক্ষে সকালে খামারবাড়ীর ওই অডিটরিয়ামে ‘বাংলাদেশে মৌ চাষ সম্প্রসারণ, সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে  মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর সাখাওয়াৎ হোসেন। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন  বিসিকের মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান ও এগ্রো প্রসেসিং এসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মঈনউদ্দিন আব্দুল্লাহ্  ও ডিএই-এর হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান।

এর আগে সকালে মেলা উপলক্ষে এক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজকরা জানান, এবারের মেলায়  সরকারি-বেসরকারি ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের ৬০টি স্টল রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা সরিষা, ধনিয়া, তিল, কালিজিরা, লিচু এসব ফসলে মৌ-চাষ, মধু আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

বিজ্ঞাপন

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবারের মেলায় স্টলের সংখ্যা বেশি। পূর্বের মেলায় ৩৬টি স্টল থাকলেও এবার স্টলের সংখ্যা ৬০। ফলে এবারের আয়োজনও বড়। দর্শনার্থীদের মধ্যে আগ্রহও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’

কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় সুন্দরবন থেকে সংগ্রহ করা প্রাকৃতিক মধুও রয়েছে। সুন্দরবন অর্গানিক হানি স্টলে ২০ শতাংশ ছাড়ে মধু বিক্রি হচ্ছে। স্টলে থাকা জিএম বুলবুল আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের মধু একেবারেই প্রাকৃতিক। শুধু মেলাতেই আমরা মধুতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। একই অবস্থা অন্যান্য স্টলেরও।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কোস্ট গার্ডের নতুন ডিজি জিয়াউল হক
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩২

সম্পর্কিত খবর