বিজয়ের দুইদিন পর শত্রুমুক্ত হয় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া
১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১১:৫৮
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর): গোটা বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। কিন্ত এরপর আরও দুইদিন পরাধীন ছিল পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলা। ১৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুমুক্ত করেন মঠবাড়িয়া।
ফলে দেশ স্বাধীনের দুইদিন পর স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ে মঠবাড়িয়ার আকাশে।
এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে। মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক মজনু খান, বাচ্চু মিয়া আকন্দসহ অন্যরা জানান, ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা সুন্দরবনে অবস্থান করছিল। তবে ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সুন্দরবন অঞ্চলের সাবসেক্টরের কমান্ডিং ইয়াং অফিসার লেফটেন্যান্ট আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বে চার শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সুন্দরবন থেকে মঠবাড়িয়ার দিকে রওনা দেন। তারা মঠবাড়িয়ার স্বাধীনতা বিরোধীদের পরাস্ত করতে শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কালিরহাট বাজারে অবস্থান নেন। অন্যদিকে শরণখোলা থেকে ওই রাতে ১২০ জনের সশস্ত্র একটি মুক্তিযোদ্ধার দল কালিরহাট বাজারে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেয়। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি আরো বৃদ্ধি পায়। মুক্তিযোদ্ধাদের ওই সশস্ত্র অবস্থান টের পেয়ে স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ভীত হয়ে পড়ে। ওই রাতেই স্থানীয় রাজাকার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালায়। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পনর প্রস্তাব পাঠায়।
এর পর ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে কালিরহাটে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা মঠবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করেন। ভীত রাজাকার বাহিনী তখন বিনা রক্তপাতেই আত্মসমর্পন করলে মঠবাড়িয়া অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়।
পরে ২০ ডিসেম্বর শহরের শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে মুক্তিযোদ্ধদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
নয় মাসের যুদ্ধে মঠবাড়িয়ার ৫১ জন প্রাণ হারান বলেও জানান স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
আজ মঠবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।