Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শেখ হাসিনার ডেপুটি হবেন তার মতোই চৌকস ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন’


২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:৩৩

ঢাকা: আওয়ামী লীগের যেকোনো স্তরের নেতৃত্বে যেই আসুক না কেন তিনি সভাপতি শেখ হাসিনার মতো চৌকস ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হবেন। অন্তত দলের সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে এমন আশা দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থাকা দলটির তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের এমন আশার কথা জানান। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কারা দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তা নিয়েও নিজেদের মতামত জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

ময়মনসিংহ গফরগাঁও থেকে আসা প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম মনে করেন, শেখ হাসিনার মধ্যে নেতা হিসেবে কিছু অতি মানবীয় গুণাগুণ রয়েছে। যেমন তিনি চাইলেই যেকোনো আন্দোলনকে বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে থামিয়ে দিতে পারেন। আবার তিনিই আন্দোলনকে করতে পারেন বেগবান! তাছাড়া তৃণমূলের নেতারাও তাকে মেনেই নৌকার রাজনীতি করেন। এজন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে হাসিনার মতোই চৌকস কাউকে চান আব্দুর রহিম।

তিনি বলেন, ১৯৬৫ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে আছি। সবসময় নিজেকে কর্মী পরিচয় দিয়েই আনন্দ বোধ করি আমি। কর্মী হিসেবে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তবে এরা কেউই শেখ হাসিনার চেয়ে বেশি জ্ঞানী ছিলেন না। আমাদের ভাগ্য যে আমরা এমন একজন নেতা পেয়েছি। ফলে তার সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও আমরা কাছাকাছি পর্যায়ের একজন নেতা চাই।

ময়মনসিংহ থেকে সম্মেলনে আসা অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আব্দুর রহিমের এই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছেন সারাবাংলার কাছে। শেখ হাসিনার পাশে তারা এমন একজনকে নেতা হিসেবে চাইছেন, যিনি নেতাদের পাশাপাশি কর্মীদেরও আপন মানুষ হবেন!

বিজ্ঞাপন

আসছেন আমন্ত্রিত অতিথি, ডেলিগেটরা

গোপালগঞ্জের ছাত্রনেতা আদনান রায়হান বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ দুটিতে ভারসাম্য থাকতে হবে। এটা অনেকটা নৌকা চালিয়ে নেওয়ার মতো বিষয়, কোনোপাশ ভারি হয়ে গেলে নৌকা সে পাশে কাত হয়ে যাবে। আমরা সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফের মত একজন নেতাকে চাচ্ছি। যিনি নেত্রীকে বুঝতে পারবেন আবার নেতৃত্বও বুঝতে পারবেন।

সম্প্রতি প্রকাশ হওয়া রাজাকারের তালিকার উদাহরণ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আল আমিন বলেন, রাজাকারের তালিকা প্রকাশের পর যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সেটি দুজন মিলেও ঠিক করতে পারেননি! কিন্তু যখনই শেখ হাসিনা কথা বলেছেন, তখনই সবকিছু স্বাভাবিক। আমাদের নেত্রীর এই যোগ্যতাটি অতুলনীয়। এখন উনি তো দেশ সামলাচ্ছেন, তাই দল সামলানোর জন্য আমরা এমন একজনকে চাচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডাকসুর হল পর্যায়ের একজন নেতাও একই বক্তব্য দিয়েছেন। এই দুই ছাত্রনেতা মনে করেন, শেখ হাসিনার মত ক্যারিশম্যাটিক কয়েকজন নেতা পাওয়া গেলে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে বহু দূরে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান সাজু বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে এখন যিনি দলের হাল ধরবেন, তাকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি কর্মসূচি সফল করতে হবে। এটি নিঃসন্দেহে অনেক বড় দায়িত্ব। এই দুটি কর্মসূচি মাথায় রেখে নেতা নির্বাচন করলেই ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনটি নানা দিক থেকেই বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা। এটি এমন এক সময় হচ্ছে যখন দৃশ্যত আওয়ামী লীগের কোনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীই নেই বাংলাদেশে। তবে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে দলটির সিনিয়র অনেক নেতা এরইমধ্যেই দল থেকে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন! তাই বিশ্লেষকরা এই সম্মেলনটিকে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি রক্ষার সম্মেলন মনে করছেন। তবে তাদের কেউই সভাপতি পদে শেখ হাসিনার বিকল্প হিসেবে কাউকেই ভাবছেন না।

এবারের সম্মেলনে সারা দেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর ও সাড়ে সাত হাজার ডেলিগেটসহ প্রায় ৬০ হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিতি আশা করা হয়েছিল। তবে কাগজ-কলমের বাইরে এই সংখ্যা এরইমধ্যেই প্রায় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এত সংখ্যক নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন তিন হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২-২৩ অক্টোবর। সেই কমিটির মেয়াদপূর্তির দুই মাসের মাথায় এবারের সম্মেলন হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের ২১তম কাউন্সিল আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর