ভিপি নুরের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ড. কামালের
২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:২৭
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরসহ তার অনুসারীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। এ ঘটনার তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যেসব ঘটনা ঘটছে, তাতে আমরা চরম উদ্বেগে ভুগছি। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামধারীরা গতকাল (রোববার) যে জঘন্য হামলা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু ভিপিসহ তার অনুসারীদের ওপর হামলা) চালিয়েছে, তা লাখো শহিদের প্রতি চরম অবমাননা ও লজ্জার বিষয়। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানাই।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মতিঝিলে ড. কামালের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, এই আওয়ামী লীগ আবরারকে হত্যা করেছে, ডাকসু ভিপি নুরের ওপর ছয় ছয় বার হামলা করেছে। কারণ এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করতে চায়।
এক ব্যক্তির শাসনের কারণে দেশে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ড. কামাল। তিনি বলেন, একব্যক্তির শাসনের কারণে আজ এই অবস্থা তৈরি হচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র আজ মৃত্যুর পথে। পেশী শক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে গণফোরাম সভাপতি বলেন, ডাকসুতে যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত করা উচিত। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানাই।
ব্রিফিংয়ে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরাম নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও অ্যাডভোকেট মোহসীন রশিদ।
এর আগে, ডাকসু ভিপি নুরসহ তার অনুসারীদের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি। সচিবালয়ে কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ডাকসু ভিপি’র সঙ্গে ভিন্নমত থাকতেই পারে। তবে তার ওপর হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, ছাত্রলীগের কেউ হলেও ছাড় দেওয়া হবে না।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে ডাকসু ভিপি নুরসহ তার অনুসারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এতে ভিপি নুরসহ তার অনুসারী বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় আহত ২৪ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ছয় জনকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোববার রাতে তুহিন ফারাবিকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়। ঢামেক হাসপাতাল থেকে সোমবার সকালে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভিপি নুরসহ বাকি পাঁচ জনের শারীরিক অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।
এদিকে, ভিপি নুরসহ অন্যদের ওপর হামলার বিচার চেয়ে রোববার সন্ধ্যায় ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। পরে সোমবার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভের ঘোষণা দেয় ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।