Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চীনের ভাষাকে পাকিস্তানের দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি


২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১২:৫৮

সারাবাংলা ডেস্ক

চীনের রাষ্ট্রভাষা মান্দারিনকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে পাকিস্তান। গতকাল সোমবার দেশটির সিনেটে এ সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়।

বিলটি পাসের পর পাকিস্তান দাবি করেছে, দুই দেশের (চীন ও পাকিস্তান) সম্পর্ক উন্নয়নে এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন অনলাইন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাতে লিখেছে, প্রতিবেশি দেশদুটোর মধ্যে সিপিইসি (চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর) বাস্তবায়নে যেন পাকিস্তানের জনগণ আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে পারে তারই অংশ হিসেবে চীনা ভাষাকে দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান আশা করছে এই পদক্ষেপের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।

তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো আবার জানাচ্ছে ভিন্ন কথা। সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস নাউ’ এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি সপ্তাহেই চীন পাকিস্তানকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। যার পুরোটা এসেছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক অফ চায়নার হাত ধরে। আর বিপুল ওই ঋণ দেওয়ার ৩ দিন পরেই এই পদক্ষেপ নিলো ইসলামাবাদ।

জি নিউজ এক খবরে লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে চীনের হাত ধরতে বহুদিন ধরেই চেষ্টা করছে পাকিস্তান। তার ফলও মিলেছে বিভিন্নসময়ে। আর সম্প্রতি একটি বড় ঋণের পর পাকিস্তান মান্দারিন ভাষাকে তাদের সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিল।

নিজ দেশের ভাষাকে এড়িয়ে গিয়ে মান্দারিনকে দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি ভালোচোখে নেননি পাকিস্তানের অনেকেই। খোদ পাকিস্তানের সরকারের বিভিন্ন অংশ থেকেই এসেছে এর প্রতিবাদ। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হুসাইন হাক্কানি টুইট করে বলেছেন, ‘পথ চলার (স্বাধীনতার) ৭০ বছরের মধ্যে নিজের ভাষাকে অবহেলা করে ৪টি বিদেশি ভাষাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। ইংরেজি, উর্দু, আরবি এবং এখন মান্দারিন (চাইনিজ)- অথচ নিজস্ব ভাষাকে বরাবরই করা হয়েছে অবহেলা।’

বিজ্ঞাপন

প্রতিবাদ হচ্ছে দেশটির বিভিন্ন সূত্র থেকেও। দেশটির খ্যাতনামা সাংবাদিক আলী হুসাইন মবওয়ালি বেলুচ টুইট করেছেন, দেশের ৪৪ শতাংশ মানুষ পাঞ্জাবি ভাষায় কথা বলে। বাকি ৬৪ শতাংশ সিন্ধি, পশতু, বেলুচসহ নানা স্থানীয় ভাষায় কথা বলে। সেই নিজের ভাষাকে অবহেলা করে আমরা (পাকিস্তান) মাত্র চীনা মান্দারিন ভাষাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা দিল। আমি ভাবি, গুটিকয়েক ছাড়া কেউ (পাকিস্তানি) কি চীনা ভাষায় কথা বলবে? বুঝবে মান্দারিন ভাষা? এটা নিজেদের ভাষার প্রতি অসম্মান, নগদ টাকার প্রতি সম্মান।

পাকিস্তানে মূলত চালু ভাষা পাঞ্জাবি, পস্তু ও অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষা। সেগুলির একটিকেও সরকারি ভাষা বলে এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি। ডনের দাবি, পরিবর্তিত আর্থিক প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানিরা বুঝতে পারছেন, চিনা ভাষা শিখলে দেশে ও চিনে উভয় জায়গাতেই কাজের সুযোগ বাড়বে, তাই সবাই এই ভাষা শিখতে চান।

সারাবাংলা/এসবি/এমএ

চীন দাপ্তরিক পাকিস্তান ভাষা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর