Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা-ব্যাংকক এফটিএ আলোচনা চলতি সপ্তাহে


৪ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:৪০

ঢাকা: বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে চায় থাইল্যান্ড। এ লক্ষ্যে আগামী ৮ ও ৯ জানুয়ারি ব্যাংককে দুদেশের মধ্যে পঞ্চম যৌথ বাণিজ্য কমিটির (জেটিসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে এফটিএ এবং দুদেশের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় জাহাজ চলাচল বিষয়ে আলোচনা হবে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

ব্যাংককের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার সঙ্গে এফটিএ চুক্তির বিষয়ে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবণা সম্প্রতিকালে থাইল্যান্ডের মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদন করেছে। এরই মধ্যে দুদেশের মধ্যে এফটিএ বিষয়ে যৌথ সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

থাইল্যান্ড সরকারের উপ-মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ করতে এরই মধ্যে থাইল্যান্ড সরকার সম্মতি জানিয়েছে। এই চুক্তি হলে ঢাকা-ব্যাংকক উভয়েই উপকৃত হবে এবং দুদেশের বাণিজ্য ঘাটতিতে সমতা আসবে। তিনি আরও জানান, ভারত ও পাকিস্তানের পরই বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশিদার।

ঢাকায় থাইল্যান্ডের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত অরুণরাঙ পথং হামফ্রিজ গত ৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করেন। তখন রাষ্ট্রদূত অরুণরাঙ জানান, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে থাইল্যান্ড বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে।

এছাড়া বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও শক্তিশালী করতে খুব দ্রুতই ব্যাংককে দুই দেশের বণিক সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করার বিষয় খতিয়ে দেখতে এরইমধ্যে থাইল্যান্ডের ঢাকা মিশন থেকে ব্যাংককে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশের পর্যটনের উন্নয়নে ব্যাংকক কারিগরি সহায়তা দেবে।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত মঙ্গলবার জানান, দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সূচক অসম পর্যায়ে আছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে থাইল্যান্ডের উচিত বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা। বাংলাদেশ ব্যবসা-বান্ধব বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এখানে বিনিয়োগ করলে এশিয়ার যেকোনো রাষ্ট্র থেকে বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। চিকিৎসা পর্যটন খাতে থাইল্যান্ডের বেশ সুনাম রয়েছে। থাইল্যান্ডের উদ্যোক্তারা যদি বাংলাদেশে যৌথভাবে হাসপাতাল উন্নয়নে বিনিয়োগ করে তবে দুই দেশই লাভবান হবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩২টি থাই প্রতিষ্ঠান সরাসরি বিনিয়োগ করেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাতটি দেশের সংগঠন বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল আ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক)-এর আওতায় থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে যে বাণিজ্য সম্পর্ক ঘনিষ্ট করার সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে চায় ব্যাংকক।

বর্তমানে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ও লেমচেবাং বন্দর থেকে মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং বা সিঙ্গাপুর বন্দর হয়ে ট্রান্সশিপমেন্টের (কোনো দেশ থেকে পণ্য পরিবহনে তৃতীয় কোনো দেশের পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার) মাধ্যমে জাহাজে করে বাংলাদেশ থেকে থাইলান্ডে পণ্য পরিবহন করা হয়। এই ব্যবস্থায় বছরে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য বাংলাদেশে আমদানি হয়। এতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৫ দিন। অথচ গত ২০১৫ সালে দুই দেশের উপকূল ঘেষে সরাসরি জাহাজ চলাচলের জন্য আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। থাইল্যান্ডের সরকারি এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সরাসরি জাহাজ চলাচল বিষয়ে এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর সরেজমিন ঘুরে পরিদর্শন করেন। সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হলে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আনা-নেওয়ায় সময় লাগবে সর্বোচ্চ পাঁচ দিন। আর এতে খরচও কমবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, আসন্ন বৈঠকে এই বিষয়ে আলাপ হতে পারে।

ঢাকা ব্যাংকক মুক্তবাণিজ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর