‘যারা গণতন্ত্র বলে গলা ফাটাচ্ছেন, তারা কি গণতন্ত্র দিয়েছিল?’
৫ জানুয়ারি ২০২০ ২০:১৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: গণতন্ত্রের অর্থ কী— এমন প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপপ্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যারা এখন গণতন্ত্র বলে গলা ফাটাচ্ছেন, তারা কি গণতন্ত্র দিয়েছিল?’
ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আবারও একই পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবার চট্টগ্রামে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন। রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানে সিনিয়স ক্লাবে এই সভা হয়।
চট্টগ্রামের সন্তান আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘জাতির পিতার হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দেওয়া হবে, তাদের বিচার হবে না— সেটা তো গণতন্ত্র না। যারা গণতন্ত্র বলে গলা ফাটাচ্ছেন, তারা কি গণতন্ত্র দিয়েছিল? ’৭৮ সালে ঢাকা পৌরসভার নির্বাচনে ৫০ ওয়ার্ডে ৩২ জন আওয়ামী লীগের। তখন গোপন ভোট বাদ দিয়ে বলা হলো প্রকাশ্যে ভোট দিতে হবে। হাত তোলার পরও লীগ প্রার্থীকে মানা হলো না। পরে ১৮ জন কাউন্সিলরকে আটকে রেখে পাকিস্তানপন্থী আবুল হাসনাতকে চেয়ারম্যান করা হয়।’
‘ব্রিটেনের রানি বা যুক্তরাজ্যের বিরোধিতা করে কেউ কি সেখানে থাকতে পারবে? অথচ বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা প্রতিনিয়ত করা হচ্ছে, সেটা কেমন গণতন্ত্র?’— এ প্রশ্নও রাখেন আমিনুল।
সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুকন্যার পক্ষে না থাকলে বাংলাদেশ আজ এ অবস্থায় আসতে পারত না বলেও মন্তব্য করেছেন সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অন্তত আদর্শিকভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যার পক্ষে সাংবাদিকরা না দাঁড়ালে দেশ এ অবস্থায় আসতে পারত না আজ। পঁচাত্তর থেকে ২১ বছর বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার হয়নি। ভয় ছিল যদি বঙ্গবন্ধুর নাম আসে, মুজিবপ্রেমীদের ঠেকানো যাবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্ভব হতো না, যদি না আপনারা (সাংবাদিকরা) ঐক্যবদ্ধভাবে না দাঁড়াতেন।’
চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কথা তুলে ধরে আমিনুল বলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিয়েছেন, মনে করিয়ে দিতে হয় না। দুই হাতে ঢেলে দিচ্ছেন। রাস্তা চেয়েছি, ফ্লাইওভার দিয়েছেন। ফ্লাইওভার চেয়েছি, টানেল দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে চট্টগ্রামের আজ কত নেতা!’
’৩২ নম্বরে (ধানমন্ডি) লাইব্রেরিতে একদিন শেখ হাসিনা বললেন, ১৯৬৯ সালে এম এ আজিজ চাচা বলেছিলেন, চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা হবে। এম এ মান্নানের স্মৃতিচারণ করে নেত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, তিনি নীরবে থাকেন, চট্টল শার্দুল। মহিউদ্দিন ভাইকে ‘৯৬ সালে মুক্তির পর সুধা সদনে নিয়ে যাই। বাধভাঙা উচ্ছ্বাস। কোথায় হিরো অব দ্য ইয়ার! নেত্রী উচ্ছ্বাসে হাত বাড়িয়ে দিলেন, কিন্তু মহিউদ্দিন ভাই সম্ভ্রমে দাঁড়িয়েছিলেন,’— স্মৃতিচারণ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন আমিনুল ইসলাম।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজের সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন তোতা এবং প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন মো. রেজা।