মুজিববর্ষ উপলক্ষে দ্বিগুণ হচ্ছে সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ বেড
৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৪৯
ঢাকা: মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালে দেশের সব সরকারি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (আইসিইউ) শয্যা দ্বিগুণে রূপান্তরিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এছাড়াও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ডায়ালাইসিস সেন্টারও চলতি বছরে উদ্বোধন করা হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট স্ট্রোক ইউনিটের সেবা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতেও ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস সেন্টারে থেকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে দেশের অনেক মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়ছেন। সরকার এ ক্ষেত্রে প্রায় বিনামূল্যে চিকিৎসা দিচ্ছে। তাই এসব বিষয়ে উন্নয়নকাজও চলছে।
স্বাস্থ্যখাতে জনবলের সঙ্কট রয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যখাতে জনবলের ব্যাপক সংকট রয়েছে। যে কারণে আমাদের ভবন আসবাবপত্র ও মেশিনপত্র আসলেও সেবা কার্যক্রম অনেকটা জায়গায় চালু হয়নি। এসব খাতে আমাদেরকে বাজেট দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু পরিকল্পনার অভাবে আমরা জনগণের বাজেট দিতে পারিনি। এদিকটায় আমাদের আরও বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে।
শীগগিরই আরও পাঁচ হাজার ৫০০ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি আমরা চার হাজার ৫০০ জন চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছি। এরপর আরও পাঁচ হাজার ৫০০ জন চিকিৎসক আমরা নিয়োগ দেবো।
তিনি বলেন, দুই হাজার চিকিৎসকের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে যার নজির একেবারেই বিরল। ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে তবে দেখা যাচ্ছে প্রয়োজন আরও বেশি। তাই আরও পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে।
হাসপাতালে নিয়মকানুনের দিক থেকেও সঠিক থাকতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন মেশিনপত্র রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আমাদের কোন নিয়মাবলী ছিলনা। কেনাবেচার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো নিয়মাবলী ছিল না। এসব ক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যাতে উন্নয়ন কার্যক্রমকে সঠিকভাবে ধরে রাখা যায়।
হাসপাতালগুলোতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে সরকারি হাসপাতাল গুলোর মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হাসপাতালের রোলমডেল হচ্ছে এই নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল। এই হাসপাতাল প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার রোগীর সেবা দিলেও বায়ু থেকে তা বুঝা যায় না এবং সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের ভিজিটর কন্ট্রোল করতে হবে না হলে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। তাছাড়া সকল চিকিৎসকরা আউটডোরে সেবাদান এটিও একটি লক্ষণীয় বিষয়।
দেশে নারীদের গড় আয়ু ৭৪ বছর ও পুরুষদের ৭২ বছরে উন্নীত হওয়ার পেছনে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ১০ম তলায় ১০০ শয্যার স্ট্রোক ইউনিটের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা.কাজী দীন মোহাম্মদ। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম, আবাসিক চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরীসহ অন্যান্যরা।
আইসিইউ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতাল মুজিববর্ষ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়