ট্রাম্প চাইলে যুদ্ধ, ট্রাম্প চাইলে শান্তি
৮ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:৩৬
ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের মিসাইল হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধের আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। শেয়ার বাজারে দরপতন হচ্ছে, বাড়ছে সোনা ও তেলের দাম। এমন পরিস্থিতিতে মূল ক্রীড়নকের ভূমিকা যিনি পালন করবেন তিনি নিঃসন্দেহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর ভক্স নিউজের।
ইতোমধ্যে সবচেয়ে সামরিক শক্তিধর দেশটির এই প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ইরানের হামলার জবাব তিনি দেবেন তার আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বা ভাষণে। একইসঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও জাতির উদ্দেশে তার ভাষণের কথা ঘোষণা করেছেন। যদিও এ দুটি ভাষণের সময় ও সারমর্ম পরিষ্কার করা হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের বৈরিতা শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি বাতিলের ফলে। তবে চলতি বছরের শুরুতে রেভ্যুলশনারি গার্ডসের কুর্দস ফোর্স কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায়। ইরান বদলা নিতে আর বিলম্ব করল না। যদিও ইরাকের ইরবিল ও আল আসাদ এই দুই মার্কিন ঘাঁটিতে মিসাইল হামলায় হতাহতের বিষয়টি এখনো অপ্রকাশিত। তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছেই। মার্কিন হাউজের ডেমোক্র্যাট স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলছেন, আরও একটি যুদ্ধের ভার আমেরিকার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ তারা সামরিক পদক্ষেপের বিপক্ষে। তবে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ইরানের এই হামলাকে যুদ্ধতুল্য হিসেবেই অভিহিত করছেন।
ইরানের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গোলযোগটা এমন এক সময় পাকালেন, যখন সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসন শুনানি অপেক্ষমাণ। তাই প্রশ্নটা হচ্ছে, ট্রাম্প আসলে কি চাইছেন? তিনি কি ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন? নাকি এ বছর মার্কিন নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের ‘ফায়দা’ লুটতে চাইছেন।
দ্বিতীয় সম্ভাবনাটাই বেশি প্রবল। কট্টর রিপাবলিকানরা ইরানকে শত্রু হিসেবেই জানে। তারা চাচ্ছে তাদের যোগ্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যাতে ইরানকে একটা সমুচিত সামরিক জবাব দেয়। ফেসবুকে রিপাবলিকানপন্থি ফক্স নিউজের মন্তব্যের ঘরে এমনটাই দেখা যায়।
ট্রাম্প যদি এবার ‘মার্কিন ইগো ও শ্রেষ্ঠত্ব’কে বশে না আনতে পারেন, তাহলে নির্ঘাত খারাপ কিছুই অপেক্ষা করছে। বিপরীতে তিনি যদি নমনীয় থাকেন। তবে ইরানও উত্তেজনা প্রশমনে মন দিবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফও জানিয়েছেন, ইরানও যুদ্ধ চায় না। সোলাইমানিকে হত্যার জবাবেই তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্প এখন কি সিদ্ধান্ত নেবেন তাই দেখার বাকি রয়েছে।
আরও পড়ুন:-
মিসাইল হামলায় ৮০ ‘মার্কিন সন্ত্রাসী’ হত্যার দাবি ইরানের (ভিডিও)
সোলাইমানি হত্যা: ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে ইরান
রাশিয়ার ‘সংহতি’, চীনের ‘সংযম’, তবে ইরান চায় ‘প্রতিশোধ’
ইরাকে আবারও হামলা যুক্তরাষ্ট্রের, যাচ্ছে ৩ হাজার সেনা
ইরাক ইরান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ডোনাল্ড ট্রাম্প মিসাইল হমালা যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ