আমনের ক্ষতি সামলাতে সরিষা, ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানোর আশা
১২ জানুয়ারি ২০২০ ০৭:৫৯
হিলি (দিনাজপুর): উপজেলার সীমান্ত এলাকায় এবার বেড়েছে সরিষার চাষ। ধানের দাম না পাওয়ায় আমন চাষ করে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হিলির কৃষকরা। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই বোনাস ফসল হিসেবে এবার সরিষা চাষে ঝুঁকছেন তারা। চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। সরিষার ফুলে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ। সড়ক দিয়ে চলতেই চোখে পড়ছে হলুদের সমারোহ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বাজারে ভালো পেলে আমনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন সরিষা চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী এই উপজেলায় গত মৌসুমে ৭১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২০ হেক্টরে।
উপজেলার চকচকা গ্রামের নাজমুল হোসেন নামে এক কৃষক বলেন, ‘এবার আমন ধানে দাম পাওয়া যায়নি, লোকসান গুণতে হয়েছে। সেই লোকসান কাটাতে এবার ৭ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। বাজারে সরিষার দাম ভালো পেলে আমনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো।’
উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামের মাসুদ নামের আরেক কৃষক জানান, ধানের উৎপাদন খরচ বেশি, দাম কম। প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদে সেচ, সার, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিক মিলে আট থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু উৎপাদিত ধান বিক্রি করে তেমন লাভ থাকে না। অন্যদিকে প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে খরচ হয় মাত্র একহাজার ৫০০ থেকে একহাজার ৮০০ টাকা। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমি থেকে ছয় মণ পর্যন্ত সরিষা পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রতি মণ সরিষার বাজার মূল্য একহাজার ৮০০ থেকে দু’হাজার টাকা। এক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমি থেকে সব খরচ বাদ দিলেও সাত থেকে আট হাজার টাকা লাভ থাকে।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আরজেনা বেগম সারাবাংলাকে জানান, জমির অবস্থা বুঝে কৃষকদের সঠিক মাত্রায় সার ও কীটনাশক দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও সরিষা আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করতে ১৪০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি এবার সরিষার ভালো ফলন হবে এবং দামও ভালো পাবেন তারা। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় স্বল্প সময়ে লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।