দেড় বছরে ৭৩ জন যাত্রীর দেড় লাখের বেশি ইয়াবা বহন
২১ জানুয়ারি ২০২০ ০৮:২৯
ঢাকা: গত দেড় বছরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৭৩ জন যাত্রীর কাছ থেকে ১ লাখ ৬৬ হাজার ২২৭ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। এসব যাত্রীরা বেশিরভাগই পেটের ভেতরে করে ইয়াবা বহন করতেন। এ নিয়ে মাদকদ্রব্য আইনে ৬৫টি মামলাও করেছে এপিবিএন।
এপিবিএন বলছে, ২০১৮ সালের জুলাইতে আটক হয়েছেন ১ জন, নভেম্বরে ১৯ জন, ডিসেম্বরে ৮ জন, গত বছরের জানুয়ারিতে ৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, মার্চে ২ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মে মাসে ৪ জন, জুন মাসে ৪ জন, জুলাই মাসে ৫ জন, আগস্ট মাসে ৩ জন, সেপ্টেম্বর মাসে ৫ জন, অক্টোবর মাসে ৪ জন, নভেম্বর মাসে ৪ জন ও ডিসেম্বর মাসে ৩জন। আর এসব আটকের ঘটনায় মাদকদ্রব্য আইনে ৬৫টি মামলাও করেছে সংস্থাটি।
দেড় বছরের পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী এপিবিএন উদ্ধার করেছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ২২৭ পিছ ইয়াবা। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জুলাইতে উদ্ধার হয়েছে ৩ হাজার ৮৭৩ পিছ। এই ঘটনায় মামলা হয়েছে ১টি, নভেম্বর মাসে ৩৭ হাজার ২০০ পিছ ইয়াবা উদ্ধারে মামলা হয়েছে ১৪টি। ডিসেম্বর মাসে ১৪ হাজার ৫০০ পিছ ইয়াবা উদ্ধারে মামলা হয়েছে ৭টি।
গত বছরের জানুয়ারিতে উদ্ধার হওয়া ১০ হাজার ৭৫৫ পিছ ইয়াবার বিপরীতে মামলা হয়েছে ৫টি। ফেব্রুয়ারিতে ৩টি মামলা হয়েছে ৮ হাজার ৪৫৮ পিছ ইয়াবা উদ্ধারে। মার্চে উদ্ধার হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৮ পিছ, মামলা হয়েছে ৩টি। এপ্রিলে উদ্ধার ৯ হাজার ২৫৫ পিছ আর মামলা হয়েছে ৩টি। মে মাসের ৫ হাজার ৭০৩ পিছ মামলার বিপরীতে উদ্ধার হয়েছে ৩টি। জুন মাসে হয়েছে ১২ হাজার ৪৯৫ পিছ ইয়াবা উদ্ধার আর মামলা হয়েছে ৪টি। জুলাই মাসে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৭ হাজার ২৩৫ পিছ আর মামলা হয়েছে ৩টি। আগস্ট মাসে ১৩ হাজার ৬৫০ পিছের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩টি। সেপ্টেম্বর মাসে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ১৩ হাজার ১৭০ পিছ, মামলা হয়েছে ৫টি। অক্টোবরে উদ্ধার হয়েছে ৮ হাজার ৫১০ পিছ আর মামলা হয়েছে ৪টি। নভেম্বরে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৬ হাজার ৭৮১ পিছ আর মামলা হয়েছে ৪টি, ডিসেম্বরে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৮ হাজার ৬৮৭ পিছ আর মামলা করা হয়েছে ৩টি।
উদ্ধার হওয়া ইয়াবা নিয়ে মামলা করার সাথে সাথে সেগুলো থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর থানা থেকে সেগুলো আদালতের মালখানায় জমা দেওয়া হয়। পরে নির্দিষ্ট সময়ে উদ্ধার হওয়া ইয়াবাগুলো একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড মিডিয়া) আলমগীর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, বিমানবন্দর দিয়ে ইয়াবা আসে সেটা অনেকেই জানতো না। কারণ অভিনব পন্থায় পেটের ভেতর দিয়ে বিমানবন্দর দিয়ে ইয়াবা বহন করা হয়। এসব খবর জানার পরই আমাদের গোয়েন্দা টিম পুরো বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়িয়ে দেয়। আমাদের সতর্ক অবস্থানের কারণে তারা গোয়েন্দা নজরদারির জালে আটকা পড়ছে। আমরা চাই কোনো মাদক চোরাচালানি যেন শাহজালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করতে না পারে। সেজন্য আমরা সবসময় সচেষ্ট আছি।
এ বিষয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল-আহসান সারাবাংলাকে বলেন, আমরা বিষয়টি ভালভাবে দেখছি। তারা মাদক চোরাচালান রোধে আরও সতর্কতার সাথে কাজ করবে এই প্রত্যাশা করি। একই সাথে তাদের যেকোনো সহায়তার প্রয়োজন হলে আমরা অবশ্যই তাদের পাশে থাকব। আমরা চাই শাহজালাল যেন মাদকের রুট হিসেবে ব্যবহার না হয়।
ইয়াবা পাচার বিমানবন্দরে গ্রেফতার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর