ইবিতে ছাত্রলীগের ২ গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২০
২১ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:৫৫
ইবি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সংগঠনটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী প্রক্টরসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিফ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ইবি ছাত্রলীগের পলাশ-রাকিব গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত। কর্মীদের নিয়ে তারা ক্যাম্পাসে আসার চেষ্টা করেছিল। পদবঞ্চিত গ্রুপ লালন-আরাফাতরা তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে তিনটা ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছি। তবে কোনো অস্ত্র ব্যবহারের খবর আমরা পাইনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বন্ধুবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব-এ ফুল দিয়ে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান শুরু করার জন্য ক্যাম্পাসে আসে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এ সময় তাদের শুভেচ্ছা জানাতে প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় সভাপতি গ্রুপের কয়েকজন কর্মী। তবে পদবঞ্চিত বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আমিন মাথায় আঘাত পায়। এর জের ধরেই এক পর্যায়ে দুগ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে সংগঠনটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী প্রক্টরসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনাকে সন্ত্রাসী ও বহিরাগতের হামলা দাবি করে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতারা তাদের গ্রেফতারের দাবিতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক আধাঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এছাড়া তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকও বন্ধ করে দেয়।
সংঘর্ষের বিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের কর্মীদের মাথা ফাটিয়ে দেয়। আর এর প্রতিবাদে আমরা মিছিল করার সময় ফের তারা হামলা করে। এতে সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। আমি তদন্ত সাপেক্ষে এই হামলার বিচার দাবি করছি।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আনিছুর রহমান বলেন, ‘মূলত ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সম্পাদক তাদের অনুসারীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে আসার চেষ্টা করে। এসময় বিদ্রোহীদের ধাওয়ায় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আহত হয়। প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় এখন শান্ত রয়েছে।’
ইবি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পর কিছুদিন দলীয় কার্যক্রম চালায় পালাশ-রাকিব। ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে কমিটি আনা হয়েছে বলে অডিও ফাঁস হলে বিদ্রোহীরা তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।