শিক্ষার উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষাকে ঘিরে বৃহৎ পরিকল্পনা
২৭ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:৩২
দেশের সামগ্রিক শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কারিগরি শিক্ষায় বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। বর্তমান শ্রম বাজারের চাহিদা পূরণ করতেই কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিকে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একটি করে কারিগরি বিষয় যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ভোকেশনাল কোর্স চালুর মাধ্যমে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার পরিধি বাড়ানো হবে। এজন্য দেশের উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হবে।
কারিগরি শিক্ষায় জোর দেওয়া প্রসঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের মানব সম্পদের অপচয় রোধ করা। এটি করতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে গেলো সপ্তাহে ‘উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রতিটি জেলা থেকে ৩২৯টি উপজেলায় একটি করে কারিগরি স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হবে। যাতে মোট ব্যয় হবে ২০ হাজার ৫২৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
তিনি জানান, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪টি ট্রেড ও ৪টি স্বল্পমেয়াদী প্যারা ট্রেড কোর্স চালু করা হবে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত এসব প্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষাও দেওয়া হবে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর। চলতি মাসে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটির কাজ ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে কিছুদিনের মধ্যেই ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হবে। সেখানে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক ভবন, ওয়ার্কসপ ভবন ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। ক্যাম্পাসে থাকবে শিক্ষক হোস্টেল ও ছাত্রী হোস্টেল। আপাতত ছাত্রদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ করা হবে না। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তির হার ২৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, চাকরি বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুবকদের দক্ষ ও যোগ্য মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হলে শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের সুযোগ বাড়বে। এটি দেশের জন্য মঙ্গল। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতেও কারিগরি শিক্ষায় জোর দেওয়া জরুরি।
এসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়ানোর পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও জোরদার করতে হবে হলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চাকরি বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে। শিক্ষার্থীরা আরো বেশি মানসম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে।