Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কষ্ট ও ভালোবাসার পঙক্তিমালা ‘নক্ষত্র নিভে যায়’


২৮ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০০

ঢাকা: বাচনশৈলীতে অতুলনীয় একজন মন্ত্রমুগ্ধকর কাব্যের সূত্রধর অধ্যাপক ড. আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে তিন যুগেরও বেশি সময় অধ্যাপনাকালে শ্রেণিকক্ষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মঞ্চে তাঁর নিখাদ কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি শুনে শ্রদ্ধায় নতজানু হয়নি এমন শিক্ষার্থী পাওয়া বিরল।

জীবনের দীর্ঘযাত্রায় কবিতার ভুবনে অবিরাম চষে বেড়ালেও, কখনো কবিতার বই প্রকাশের অনুভব করেননি মুগ্ধপ্রাণ এ নিভৃত কবি। নিঃসঙ্গ সময়ের আবর্তে এসে আনন্দের ভৌগোলিক অবস্থান খুঁজতে গিয়ে অবশেষে নিজের কবিসত্তার আত্মপ্রকাশ করলেন ‘নক্ষত্র নিভে যায়’ কাব্যগ্রন্থ দিয়ে। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৭) জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে বইটির মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে গ্রন্থটির ওপর আলোচনা করেন শিক্ষাবিদ-কথাশিল্পী অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আহাদুজ্জামান মুহাম্মদ আলী কবিতাকে জীবনের মর্মে গ্রহণ করেছেন। তার কবিতায় অপরিণতির কোনো চিহ্ন নেই। তিনি শব্দচয়নে সতর্ক। পাশাপাশি কবিতার কাঠামোর ব্যপারেও তিনি সযতন।’

তিনি বলেন, ‘কবিতার বইটিকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমভাগে রয়েছে খোয়ানো শব্দের লেশ। সেখানে অন্তরঙ্গতার সুষ্ঠু প্রয়োগ করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে শোক আর দ্রোহের শ্লোক। এ দুইয়ের সমন্বয় বইটিকে করেছে অসাধারণ।’

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘বইটি উৎসর্গ করা হয় কবির প্রয়াত জীবনসঙ্গিনী অধ্যাপক সিতারা পারভীনকে। বইটির প্রত্যকটি কবিতায় কোনো না কোনো বিষয় আন্দোলিত হয়েছে। যা তার কবিতাগুলোতে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। শুধু এই নয়, তার কবিতাগুলোতে ঠাঁই পেয়েছে প্রাকৃতিক ও বর্তমান সকল ঘটনার প্রতিধ্বনি। তিনি তার প্রত্যেকটি কবিতায় একটি সুর তুলেছেন কিন্তু সেই সুরের ফলাফল ছুড়ে দিয়েছেন পাঠকের কাছে।’

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী সঞ্চয়কে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন। মানুষ বেঁচে থাকার প্রধান উপাদান হলো কবিতা। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ের সঙ্গে যে কবিতার গভীর সম্পর্ক রয়েছে তা তিনি তার এ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে পাঠককে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন।’

অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, নক্ষত্র নিভে যায় বইটি একটি কষ্ট লালনের বই। বইটিতে রয়েছে একটি দার্শনিক বোধ এবং ভালোবাসার কথা। এখানে তার ব্যক্তিগত জীবনকে প্রতিফলন করে এমন কবিতাই বেশি স্থান পেয়েছে। দ্বিতীয় অংশে সমকালে বাংলাদেশের অন্যায়, অবিচার এবং ক্ষোভ ইত্যাদি বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। ব্যক্তি, দেশ এবং বিশ্ব একাকার হয়ে গেছে তার নক্ষত্র নিভে যায় এই কাব্যগ্রন্থে। কবির বই থেকে ‘শেষ চুম্বন’ কবিতাটিও তিনি পাঠ করেন।

কাব্যগ্রন্থটির লেখক আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আগে কবিতা না লিখলেও কবিতার সাথে আমার আত্মিক বন্ধন কখনও ছিন্ন হয়নি। আমার কবিতা লেখা শুরু হয়, বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। আমি সোশ্যাল মিডিয়ার কবি। আমি যে কোনো কবিতা আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছি। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন পত্রিকাতে তা প্রকাশ করা হয়েছে।’

পরে বইটিতে না ছাপানো কয়েকটি কবিতা পাঠ করে তিনি অশ্রুসজল হয়ে পড়েন। পাঠ করা কবিতাগুলো হলো– ‘আনন্দের ভৌগোলিক অবস্থান’, ‘যেদিন কবিতা লেখা হয় না’, ‘ভেসে যাচ্ছে’ ও‘ সকাল’।

অনুষ্ঠানে প্রকাশিত গ্রন্থ থেকে কবিতা পাঠ করেন কবির ছোট ভাই খ্যাতিমান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নুর। তার পাঠ করা কবিতা হলো ‘এক সাংবাদিকের স্বগতোক্তি।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাব্যগ্রন্থটির প্রকাশনী সংস্থা অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মিডিয়া ব্যক্তি ও কবির সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

কবি আহাদুজ্জামান ড. আহাদুজ্জামান নক্ষত্র নিভে যায়

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর