বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:২৬
ঢাকা: জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) নতুন কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি দেওয়া হলো।
সোমবার রাজধানীর তোপখানা রোডে বাসদ (মার্কসবাদী) কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বৈঠকে বসেন।
জোটের সমন্বয়ক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মনির উদ্দিন পাপ্পু, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আ.ক.ম. জহিরুল ইসলাম, বাচ্চু ভুইয়া ও শহীদুল ইসলাম সবুজ।
সভায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও করণীয় বিষয়ে সভার এক প্রস্তাবে বলা হয়, গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে শতকরা ৯০ ভাগ ঢাকাবাসী ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে বর্তমান সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি চূড়ান্ত অনাস্থা প্রকাশ করেছে। বিগত জাতীয় নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বরের দিনের ভোট ২৯ তারিখ রাতে ডাকাতি করে ভোটাধিকার হরণের যে নজির স্থাপন করেছে তাতে জনগণ মনে করে বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। তারই প্রমাণ হলো ঢাকা সিটি নির্বাচন।
প্রস্তাবে বলা হয়, শাসক দলের তথ্যমন্ত্রী বলেছেন ‘বিএনপির ইভিএম বিরোধী প্রচারণার কারণে জনগণ ভোট কেন্দ্রে আসেনি’, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভোটার অনুপস্থিতির কারণটা গবেষণার বিষয়’, শাসক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘১০০ বছরেও এমন স্বচ্ছ ভোট হয়নি’, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘শীতের কারণে ভোটার কম এসেছে’, পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থী জিতবেই এ অতিবিশ্বাসের কারণে ভোটার কম’; আর দলকানা নির্বাচন কমিশন সচিব বলেছেন, ‘ব্যস্ততার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম’, ‘আওয়ামী লীগের কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে গেলেই তো আরো বেশি ভোট পড়ার কথা’ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে ভোট নিয়ে শাসক দল, নির্বাচন কমিশন, আমলা প্রশাসন, পুলিশ ও গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থার অগণতান্ত্রিক চেহারা ফুটে উঠেছে। ঢাকাবাসী জনগণ এ বিষয়টা আগেই টের পেয়েছিল ফলে তারা ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে সরকার ও কমিশনের প্রতি চূড়ান্ত অনাস্থা প্রকাশ করেছে।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, আওয়ামী মহাজোট সরকার শুধু জনগণের ভোটাধিকারই হরণ করেনি, গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে নিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের পথকে রুদ্ধ করে অগণতান্ত্রিক শক্তির ক্ষমতা দখলের রাস্তা প্রসস্ত করেছে।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমান আওয়ামী সরকার তথা দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এটি আবারও প্রমাণিত হলো। ফলে রাজপথের আন্দোলনে বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করেই জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।
বাম জোটে নতুন সমন্বয়ক: বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক নির্বাচিত হয়েছে। তিনি ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী তিন মাসের জন্য সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।